বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভুমি সুন্দরবন ভ্রমণ গাইড

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনভুমি সুন্দরবন । সুন্দরবন বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে বিস্তীর্ণ বনভূমি; বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত, এটি 1997 সালে বাংলাদেশের ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে স্বীকৃত হয়েছিল। পদ্মা, মেঘনা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকার ব-দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত, এই অনন্য বনাঞ্চলটি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ 24 পরগণা, উত্তর 24 পরগণা জেলা জুড়ে বিস্তৃত। সুন্দরবন হল বিশ্বের বৃহত্তম উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বন, যার আয়তন প্রায় 10,000 বর্গ কিমি; যার মধ্যে প্রায় 6,000 বর্গ কিমি বাংলাদেশে এবং প্রায় 4,000 বর্গ কিমি ভারতে অবস্থিত। সুন্দরবনের বাংলাদেশী এবং ভারতীয় অংশগুলি, যদিও নিরবচ্ছিন্ন ল্যান্ডমার্কের সংলগ্ন অংশগুলি, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় পৃথকভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে: যথাক্রমে “সুন্দরবন” এবং “সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান” হিসাবে। সুন্দরবন হল সামুদ্রিক স্রোত, কাদা উপকূল এবং ম্যানগ্রোভ বনের একটি নেটওয়ার্ক। এই অঞ্চলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতল হরিণ, কুমির এবং সাপ সহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী, পাখি এবং সরীসৃপ রয়েছে বলে জানা যায়।বর্তমানে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা প্রায় ২০০I ইদানীং বাঘের প্রজনন বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । 21 মে 1992 সালে, সুন্দরবন পরিবেশগত গুরুত্বের একটি রামসার সাইট হিসাবে স্বীকৃত হয়।

কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে যাওয়ার ব্যবস্থা ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন এবং লঞ্চে সরাসরি খুলনা যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এসি এবং ননএসি দুই ধরনের বাস চলাচল করে। ঢাকা থেকে সোহাগ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ এবং ঈগল পরিবহন নিয়মিত চলাচল করে খুলনার উদ্দেশ্য। ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গাড়িগুলো খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ঢাকা থেকে সড়ক পথে খুলনা পৌঁছাতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টা । ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন কোম্পানির লঞ্চ নিয়মিত যাতায়াত করছে খুলনার উদ্দেশ্যে। খুলনার নন এসি বাসের ভাড়া ৫৫০, এসি ১৪০০ টাকা। বাস থেকে নেমে রিকশা বা অটোতে যেতে হবে লঞ্চ ঘাট। আর ট্রেনে খুলনা গেলে স্টেশনে নেমে গাড়ি নিতে হবে না। কারণ, স্টেশন ও লঞ্চঘাট একেবারেই গায়ে লাগানো। সায়েদাবাদ থেকে মংলার সরাসরি বাস আছে। এই সেমি চেয়ারকোচ বাসগুলো রাত ৮টা থেকে ৮.৩০ এর মধ্যে ছেড়ে গিয়ে ভোর ৫-৬টার মধ্যে মংলা পৌঁছায়। ভাড়া ৪৫০ টাকা। খরচ: সুন্দরবনের প্যাকেজগুলোতে জাহাজে ওঠার পর থেকে তিনদিনের টুর শেষে আবার ঘাটে ফেরা পর্যন্ত লঞ্চভাড়া, ফুয়েল, খাবার, নাস্তা, প্রত্যেকের সরকারী পাশ, রেভিনিউ, গাইড, গানম্যান, বনে ঘুরার ছোট নৌকা সহ অন্যান্য সব খরচ ইনক্লুড থাকে। অবশ্য পকেটে হিউজ পাত্তি নিয়া গেলেও সেখানে খরচ করার কোন যায়গা নাই! অনেকে ঢাকা থেকেও প্যাকেজ করে। এখানে খুলনা বা মংলা থেকে সম্ভাব্য খরচ উল্লেখ করা হল। খাবারের মান ও জাহাজ ভেদে মাঝারি ধরনের একটি টুরে সাধারনত খরচ পরে ৬৫০০-৮৫০০ টাকা। বেশি ভালো যেতে চাইলে এর উপরে পারহেড ১৯,০০০ টাকা পর্যন্তও প্যাকেজ আছে। আর সুন্দরবন টুরের খরচ কমানোর যে চেস্টা করছিলাম। সেই মোতাবেক স্টুডেন্টদের জন্য সুখবর হল এই যে ৩৫ থেকে ৪০ জন হলে একটি লঞ্চে ফ্লোরিং করে ৪০০০-৫০০০ টাকার মধ্যেও তিন দিনের সুন্দরবন ভ্রমন সম্ভব। তবে ন্যাশনাল হলিডে গুলোতে খরচের কোন লিমিট নেই। আর পরাপর দুইদিন যদি ছুটি পরে তাহলেতো কোন কথাই নেই। খরচ আকাশও ছুতে পারে। আর এডভান্স দিয়ে এক দেড় মাস আগে বুকিং না দিলে খালি পাওয়াই কঠিন। অনেকে জাহাজ ভাড়া নিয়ে নিজেরাই আয়োজন করতে চায়, হ্যা সুন্দরবনে নিজেরাও আয়োজন করা সম্ভব ।