ওজন কমাতে শশা কিভাবে একটি ডায়েট চার্টকে পরিপূর্ণ করে

সুপ্রিয় বন্ধুরা, শরীরের বাড়তি ওজন কমিয়ে ফেলতে আমরা যে ডায়েট চার্ট ফলো করি তা অনেক সময় অপূর্ণ থেকে যায়। যদি আমরা তাতে শশা যোগ না করি। বন্ধুরা, শশা কিভাবে একটি ডায়েট চার্টকে পরিপূর্ণ করে আজকে সেই বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

তার আগে জেনে নেওয়া যাক শশা সম্পর্কে কিছু তথ্য। আমরা শশা প্রকৃতিতে চাষ করে থাকি। শশার সাথে ভিটামিন ও মিনারেল এবং এর সাথে সাথে ৯৫ শতাংশ পানি রয়েছে। শশায় যে পরিমাণ উপকারী উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা ত্রুটি সারাতে অনেকটা কার্যকর। তাই বিজ্ঞানসম্মতভাবে আজ প্রমাণিত যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় ও ভেষজ ওষুধ হিসেবে কাজ করে এই শশা। শশা সবজি সালাদ হিসেবে আমরা যেমন খেয়ে থাকি একই সাথে এটি কিন্তু আমাদের শরীরের ওজন কমাতে দারুন কাজ করে।

ডায়েট চার্ট ফুলফিল করতে শশার ভূমিকাঃ

ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট
  • আমরা সাধারণত ওজন কমিয়ে ফেলতে তিনটি বিষয়কে একসাথে যোগ করি।

সুষম খাবার,

এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম,

ঘুম।

বন্ধুরা,

  • ঘুম এবং ব্যায়াম যদি আমরা ঠিকমত করে থাকি এবং কিভাবে তা করতে হয় সেটা আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু যে বিষয়টি আমরা জানি না সেটি হল খাবার-দাবারে যদি আমরা ব্যাল্যান্স না রাখি তাহলে কোন কিছুতেই আমাদের শরীরের বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব হবে না।
  • আর এই খাবারের তালিকা পরিপূর্ণ করতে খুব বেশি কাজ করে থাকে তাহল শশা।

ডায়েট চার্ট শশা যেভাবে ফলো করবেনঃ

  • আমরা যেহেতু ডায়েট চার্ট ফলো করে থাকি তাই কিছুক্ষণ পরপর আমাদের খিদে লাগতে পারে।
  • বন্ধুরা তাই যখনই আমাদের খিদে লাগবে তখনই আমরা শশাকে আমাদের খাদ্য তালিকায় এড করে দিব।
  • কারন এতে আমাদের ক্ষিদা ও দূর হয়ে যাবে পাশাপাশি আমাদের শরীরের বাড়তি মেদ কমে যাবে।

এখন আসা যাক………

কিভাবে শসা কে আমাদের ডায়েট চার্টে এ্যাড করে নিবঃ

১। সকাল বেলা শশার জুস খাওয়ার মাধ্যমেঃ

ওজন কমাতে শশার ভূমিকা
ওজন কমাতে শশার ভূমিকা
  • সকাল বেলা উঠে শসার জুস করে আমরা খেয়ে নিতে পারি। এই জুসটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ লাগবে…………
  • ১ টি শশার রস।
  • ২ চা চামচ লেবুর রস।

যেভাবে খাবেনঃ

  • সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই প্যাকটি তৈরি করে নিতে হবে। এবং ব্লান্ডার করে দারুন একটি জুস তৈরি করে এই প্যাকটি খেয়ে ফেলতে হবে।

২। সকালের নাশতায় শশার সালাদ যোগ করেঃ

  • সকালে আমরা এক্সেসাইজ করতে পারি। এক্সারসাইজ থেকে আসার পরে যখন আমরা ব্রেকফাস্ট নিব তার সাথে অবশ্যই শশার সালাদ যোগ করব।

যে ভাবে সালাত তৈরি করতে পারেনঃ

এটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ আমরা একসাথে করব………

  • ১ টি শশা।
  • কয়েকটি ক্যাপসিকাম।
  • ২ -৩ টা গোলমরিচ।
  • অল্প পরিমাণ জিরার গুঁড়া। 

যেভাবে তৈরি করবঃ

  • সবগুলো শশা কেটে তার ওপরে দুই টেবিল চামচ জিরা গুঁড়ো ফেলে দিবো।
  • তারপরে বাকি উপকরণ গুলো কেটে আমরা আজ খেয়ে নিব।
  • অবশ্যই ভালো মতো পরিষ্কার করার পর এই শশা আমরা খাব।
  • যে ধরনের ব্রেকফাস্ট আমরা গ্রহণ করি তা সঠিকভাবে হজম হতে শশা সহায়তা করে।
ওজন কমাতে ডায়েট চার্ট
  • এবং এই ধরনের খাবারের সাথে যদি জৈবিক বিষাক্ত পদার্থ শরীরে ঢুকে তাহলে তা হজম করাতে সালাদ কিন্তু দারুণ কাজ করে।
  • তার পাশাপাশি যদি কোন ফ্যাট খাবারের মধ্য দিয়ে শরীরে যায় তাকে খুব তাড়াতাড়ি বিক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে পরিণত করে ফেলে।
  • তাই সকালবেলায় খাবারের আগে খাবারের পরে আমাদেরকে অবশ্যই শশা আমাদের ডায়েট চার্ট এ রাখতেই হবে।

বন্ধুরা, যেহেতু ডায়েট চার্ট আমরা ফলো করি শরীর কমিয়ে রাখতে তাই খাবার যেহেতু আমরা খুব একটা বেশি খায়না,তাই কিছুক্ষণ পরপরই আমাদেরকে শশা রাখতে হবে।

ডায়েট চার্ট সকালের নাশতার ঘন্টা পর শশার জুসঃ

  • সকালের ব্রেকফাস্ট এর অন্ততপক্ষে দুই ঘন্টা পরে হালকা খাবার হিসাবে আমরা শশার দারুন একটি জুস খেয়ে নিতে পারি।

এটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ লাগবে………

  • ১ টি ব্লেন্ড করা শশার রস।
কিভাবে দ্রুত ওজন কমানো যায়
  • ১ টি ব্লেন্ড করা আপেলের রস।
  • ২ টেবিল চামচ টক দই।

যেভাবে বানাবেনঃ

  • উপকরণ গুলো একসাথে করে চমৎকার একটি জুস আমরা বানিয়ে নিব।
  • সকালের নাশতার ২ ঘন্টা পরে সেই জুস খেয়ে ফেলবো।
  • বন্ধুরা এটি আমাদের খিদা কে দূর করবে পাশাপাশি আমাদের শরীরে খারাপ এসিড তৈরি হওয়া থেকে শরীরকে রক্ষা করবে। এর পাশাপাশি খাদ্য হজমে সহায়তা করবে। এবং শরীরে অতিরিক্ত গ্যাসের উৎপাদন কমিয়ে দিবে, যা পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিক আলসারের মত সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করবে।
  • আর আমরা যদি এ সময় অন্য খাবারের পরিবর্তে শশার জুস  খায় তা আমাদেরকে ফিট রাখতে খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে।  
  • তাই এই সময় খাবারের খিদা দূর করার পাশাপাশি শরীরকে সুষম খাবার দিয়ে শরীর ভালো রাখা যায়। তাই এই সময় অবশ্যই আমরা এই শশার জুস গ্রহণ করব।
  • দুপুরের খাবারে শশার সালাত অবশ্যই আমরা খাব।
  • সন্ধ্যাবেলায় যখন আমরা হালকা নাস্তা করব তখন কিন্তু শসার জুস না হলে যেন ডায়েট চার্ট অপূর্ণই থেকে যায়।

এই জুসটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ লাগবে………

  • ১ টি শশার ব্লেন্ড করা রস।
  • ২ টেবিল চামচ পুদিনা পাতার রস।
  • ৩ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল।

যেভাবে গ্রহন করবেনঃ

  • উপকরণ ভালোমতো ব্লান্ডার করার পরে দারুন একটি জুস তৈরি হয়ে যাবে।
  • বিকেলের নাস্তা তে অবশ্যই এটি রাখতে হবে।
  • এটি আমাদের বিকেলের খাবারে যদি খারাপ ফ্যাট থাকে তাহলে তা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এবং খাবার খেয়ে ভালো মত হজম হতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শরীরের পানি শূন্যতার অভাব পূরণ করে।
  • যেহেতু শশার মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি পানি থাকে তাই বিকেলের নাস্তায় অবশ্যই আমরা আমাদের ডায়েট চার্টে এই শশার জুস টি অন্তর্ভুক্ত করবো।

রাতের খাবারঃ 

ওজন কমানোর উপায়
ওজন কমানোর উপায়
  • বিকেলের নাস্তার মধ্যে যদি গেপ টা একটু বেশি হয়ে যায়, তাহলে একটি আস্ত শশা  ভালোমতো পরিষ্কার করে আমরা খেয়ে নিব।
  • এটি আমাদের খিদে মিটিয়ে দিবে। পাশাপাশি আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক রাখবে।
  • রাতের খাবারে আমরা অবশ্যই একটু বেশি পরিমাণে শশার সালাদ খাব। যেহেতু রাতের খাবার আমাদের খুবই হালকা হবে কারণ রাতে আমরা তেমন একটা কোনো কাজই করি না তাই যে খাবার খায় তা আমাদের হজম হতে একটু বেশি সময় নেয়।
  • আর যে খাবার শর্করা হিসাবে রাতে গ্রহণ করি তা যেহেতু রাতে কোনো কাজ করিনা সে শর্করার ক্ষয় হয় না বললেই চলে। আর এই শর্করার ক্ষয় না হওয়ার কারণে ফ্যাটে পরিণত হয় যা আমাদের শরীর বাড়িয়ে দিতে খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • তাই রাতের খাবার খুবই কম গ্রহণ করব আর রাতের খাবারের পরিবর্তে শসা ও গাজর এর সাথে ক্যাপসিকাম যোগ করে আমরা দারুন একটি সালাদ তৈরি করে খেয়ে নেব।
  • এই শশার সালাদ গ্রহণ করার পরে অন্ততপক্ষে এক ঘন্টা মত হেটে  নিয়ে আমাদেরকে ঘুমিয়ে যেতে হবে।

বন্ধুরা পুরো সারাদিনের একটি ডায়েট চার্টে আপনারা দেখলেন কিভাবে আমরা শশাটি কে এড করে নিলাম। এই শশাটি অ্যাড করার কারণে আপনার ওজন কমানোর ডায়েট চার্ট এটা কিন্তু ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তি কার্যকর করতে ভূমিকা পালন করবে। তাই শরীরের ডায়েট চার্ট  যখন তৈরি করবেন শরীরের ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই তার সাথে শশা এইভাবে অন্তর্ভুক্ত করবেন। তা না হলে কোন ডায়েট চার্ট পরিপূর্ণ হবে না।

বন্ধুরা, তাই আমরা আশা করব আমাদের দেওয়া আজকের তথ্যগুলো আপনাদের খুব বেশি কাজে দিবে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্ট  ফলো করতে আপনাদেরকে এই তথ্যগুলো অনন্য ভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করবে। তাই আমাদের অনুরোধ আপনারা খুব যত্ন করে এই সকল পরামর্শ গুলো অনুসরণ করবেন এবং নিজেদের বাড়তি ওজন কমিয়ে নিজেদেরকে সুদর্শন স্লিম ফিগারের অধিকারী করবেন।