বর্তমান সময়ে যেন ওজন কমানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে সবাই। এই প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে গিয়ে আমরা ভুলে যাচ্ছি আমাদের শরীরের সুস্বাস্থ্যের কথা, সুষম খাদ্যের কথা, রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা, বয়সের সাথে ওজনের ভারসাম্যের কথা্ ও সর্বোপরি নিজেকে শক্তিশালী ও সুদর্শন দেখানোর কথা।
তাই আজ ওজন বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলার আগে আমাদের যে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে সেটা হল ওজন বাড়া মানে কিন্তু ফ্যাট বাড়া নয়।
সুষম উপায়ে ফ্যাট লস করেও কিভাবে আমরা আমাদের ওজন বাড়াতে পারি তার একটা পুরো ডায়েট চার্ট আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
যে চার্ট টি আপনাদের জন্য করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপাদান ও আপনাদের ব্যস্ত জীবনকে মাথায় রেখে।
ছেলে ও মেয়ে উভয়েই আপনারা এই চার্ট টি ফোলো করলে এক মাসের মধ্যে ৩ থেকে ৪ কেজি ওজন বাড়াতে পারবেন।
তাহলে শুরু করা যাক,
> একদম ভোরে ঘুম থেকে উঠে উষ্ণ গরম দুই গ্লাস পানি একটা নির্দিষ্ট স্থানে বসে খেতে হবে কারণ সকাল বেলার উষ্ণ জল আপনার মাসল ও ব্লাড সার্কুলেশন এক্টিব রাখবে।
শারিরীক ব্যায়ামঃ
এরপর ৩০ মিনিট বিরতি দিয়ে ডেইলি এক্সেসাইজ করে নিতে হবে। এটা ৩০ অথবা ৪৫ মিনিটের মতো করলে ভালো হয়। এক্সেসাইজটা আপনার পছন্দ মতো আপনি করতে পারেন ইয়োগা, সুইমিং ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখা ভাল,সেটি হলো আপনি যেই রকম ভালোভাবে ডায়েট চার্ট মেন্টেন করুন না কেন আপনি যদি এক্সেসাইজ না করেন তাহলে আপনি কখনোই আপনার এক্সপেক্টেড রেজাল্ট পাবেন না।
তাই ওজন বাড়ানোর জন্য এক্সেসাইজ টা খুবই দরকার সেটা হোক সকালে বা দিনের যেকোনো সময়। কিন্তু সকালে হলে ভালো হয়। এক্সেসাইজ থেকে ফিরে এসে আপনি মিক্স ফ্রট জুস নিতে পারেন।
এই মিক্স ফ্রুট জুসের মধ্যে কলাকে মেন্ডেটরি ভাবে রাখতে হবে। কারণ কলাতে প্রচুর এনাজি থাকে। এর সাথে আপনি রাখতে পারেন আপেল, আঙ্গুর এ জাতীয় এনার্জিটিক ফল ।
এই ফ্রুট জুসকে একটু মিষ্টিকরে খেতে চাইলে আপনি এর সাথে মালাই দুধ অথবা মধু মিক্স করতে পারেন। কিন্তু ভুলেও চিনি মিক্স করবেন না।
ব্রেকফাস্ট বা সকালের খাবারঃ
আবার ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে আপনি আপনার ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট করতে পারেন।
ব্রেকফাস্টে ডিম ,পাউরুটি, পরোটা রাখতে পারেন। এরপর আপনার পছন্দ মত যে কোন একটা চা খেতে পারেন ।
মনে রাখতে হবে ব্রেকফাস্ট কখনো মিস দেওয়া যাবে না। কারণ ব্রেকফাস্ট এর মধ্য দিয়ে আপনি সারাদিনের কর্মব্যস্ততার জন্য নিজেকে সাউন্ডলি ফিট রাখতে পারবেন।
স্ন্যাক্সঃ
ব্রেকফাস্টের তিন ঘন্টা পরে অফিস আওয়ারের মাঝে একটা হালকা স্ন্যাক্স নিতে পারেন ।
যেমন ধরুন একটা সিজনাল ফ্রুটস।
দুপুরের খাবারঃ
এরপর তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুরের খাবার সেরে ফেলতে পারেন। দুপুরের খাবারে অবশ্য একটু কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি রাখতে হবে । আর এই কারণে দুপুরের খাবারে ভাত বা রুটি রাখতে পারেন। আর সাথে সবজি তো অবশ্যই থাকবে।কম খরচে আপনি প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে পারেন।
বিকালের স্ন্যাক্সঃ
বিকেলে হালকা স্ন্যাক্স এর সাথে পছন্দমত নিতে পারেন। সবচাইতে ভালো হয় স্ন্যাক্স টা যেন বেশি না হলে।
এরপর আসা যাক রাতের খাবারেঃ
রাতের খাবারটা আমরা খুবই হালকা ভাবে নিব। কারণ রাতে যেহেতু আমরা খুব কম কাজ করি তাই আমাদের এনার্জি লস হয় কম। তাই রাতে যদি আমরা বেশি করে খাবার খায় এইগুলা আমাদের ফ্যাট বাড়াতে সাহায্য করবে ।
তাই আমাদের রাতের খাবারে খুব বেশি পরিমাণে সালাদ খেতে হবে।
আমাদের রাতের খাবার ও ঘুমানোর সময়ের মধ্যে যদি লম্বা বিরতি থাকে তাহলে আমাদের ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে হবে।
এই চার্ট যদি নিয়মিত ফোলো করতে পারেন তাহলে এক মাসের মধ্যে একটা শতভাগ কার্যকারিতা আপনি নিজেই অনুভব করবেন । আমাদের দেওয়া এই চার্টটি ডাক্তারের পরামর্শমতো ও ফলোয়ারদের অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রমাণিত। তাই শরীরের ওজন নিয়ে চিন্তিত না হয়ে বুদ্ধিমানের মতো আমাদের এই চার্ট ডিসিপ্লিন করে চালু করুন আর রেজাল্ট নিজেই এক্সপেরিয়েন্সড করুন।