চোখ এর গঠন ও কাজ কেমন সেই বিষয় নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত ভাবয়ে আলোচনা করব।
প্রথমে আসা যাক, চোখ কি??????
যে বিশেষ অঙ্গের দ্বারা প্রাণীরা পরিবেশ থেকে আলোক জাত ও উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং বহির্জগতের দৃশ্য দেখতে পায় তাকে চোখ বলে।
চোখের গঠন
চোখ হলো আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়। আমাদের চোখ দুটি মস্তিষ্কের সম্মুখভাগে অক্ষিকোটর এ অবস্থিত। একটি একজোড়া অক্ষিপল্লব এবং একটি অশ্রুগ্রন্থি নিয়ে গঠিত।
অক্ষিগোলকের প্রধান অংশগুলো হলো
কনজাংটিভা,
কর্ণিয়া, আইরিশ,
লেন্স,
স্ক্লেরা,
কোরয়েড এবং
রেটিনা
প্রথমেই আসা যাক,
মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশ ও এর গঠন ও কাজঃ
অক্ষিপল্লব
চোখ দুটি সংখ্যার, একটি উর্দু পল্লব ও একটি নির্মল লোক দিয়ে ঢাকা থাকে। আঁখি পল্লবের কিনারায় একরাশি পল্লব লোম থাকে।
অক্ষিপল্লবের কাজঃ
বাইরের আঘাত ও ধুলোবালির হাত থেকে রক্ষা করে এই অক্ষিপল্লব।
কনজাংটিভা
কনজাংটিভা অক্ষিগোলকের একবারে বাইরের দিকে অবস্থিত এক রকম পাতলা আবরণ।
কনজাংটিভা এর কাজ
কনজাংটিভা এর কাজহলো চোখের অভ্যন্তরীণ অংশকে এর সামনের যে কোন আঘাত থেকে রক্ষা করা।
আইরিশ
এটি চোখের নিচে এবং লেন্সের উপরে অবস্থিত ক্ষুদ্র একটি অংশ।
আইরিসের কাজ
আইরিসের কাজ হল কনিকা কে ছোট-বড় করে চোখে আলো প্রবেশ করতে সাহায্য করা।
লেন্স
এটি আইরিশের পরবর্তী অংশ। এটি আলোকরশ্মি প্রতিসরণে মুখ্য ভূমিকা রাখে।
কৃষ্ণ মন্ডল বা কোরয়েড
এটি অক্ষিগোলকের পেছনের অংশজুড়ে অবস্থিত একেবারে বাইরের আবরণ।
কৃষ্ণ মন্ডল এর প্রধান কাজ হলো চোখের ভিতর কার অংশ গুলো কে রক্ষা করা বা কৃষ্ণ মন্ডল এর পশ্চাতে অবস্থিত। কৃষ্ণ মন্ডল এর পরবর্তী অংশে মেলানিন নামক রঞ্জক থাকায় এ অংশটি কালো রংয়ের। এর কাজ হল কৃষ্ণ আলোর প্রতিফলন রোধ করে এবং রেটিনাকে রক্ষা করে।
রেটিনা
অক্ষিপট এর পশ্চাদ্ভাগে অবস্থিত। এটি কোরয়েড এর পরবর্তী স্নায়ুর স্তর। এবং এটি রড কোষ ও কোণ কোষ নামে দুই রকম স্নায়ু কোষ দিয়ে গঠিত।
এর কাজ হলো বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করা। রড কোষ ও কোণ কোষ আলো ও বর্ণ গ্রাহক হিসেবে কাজ করে এবং উজ্জ্বল আলোয় সংবেদনশীল। এটি অশ্রুগ্রন্থির বহির্ভাগে এবং অক্ষিপল্লবের নিচে ছোট বাদামের মত দেখতে একটি করে অশ্রুগ্রন্থি থাকে থাকে। যাকে অশ্রু গ্রন্থির ক্ষরণ বলে।
এখন আমরা জানবো ন্যূনতম কতটুকু দূরত্ব বজায় থাকলে আমরা কোন বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পাব।
প্রথমে আসা যাক, স্পষ্ট দর্শনের নূন্যতম দূরত্ব কত টুকু দরকার। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পাই যে কোনো বস্তুকে চোখের যত নিকটে নিয়ে আসা যায় বস্তুটি স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু কাছে আনতে আনতে এমন একটা দূরত্বে আসে যখন আর বস্তুটি খুব স্পষ্ট দেখা যায় না। যে ন্যূনতম দূরত্ব পর্যন্ত চোখ বিনা কষ্টে স্পষ্টভাবেই দেখতে পায় তাকে স্পষ্ট দর্শনের দূরত্ব বলে।
স্বাভাবিক চোখের স্পষ্ট দর্শনের নূন্যতম দূরত্ব প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার থেকে ২৫ সেন্টিমিটার। তখন দূরবর্তী বিন্দুকে চোখের নিকট বিন্দু বলে মনে হয়। কোন বস্তু ২৫ সেন্টিমিটার এর কম দূরত্বে থাকলে তাকে স্পষ্ট দেখা যায় না, সবচেয়ে বেশি যে দূরত্বে কোন বস্তু থাকলে তা স্পষ্ট দেখা যায় তাকে চোখের দূরবিন্দু বলে। স্বাভাবিক চোখের জন্য দূরবিন্দু অসীম দূরত্বে অবস্থিত হয়। অর্থাৎ স্বাভাবিক চোখ বহুদূর পর্যন্ত স্পষ্ট দেখতে পায় দর্শনাভূতির স্তুতি কালের উপর নির্ভর করে।
অতয়েব বন্ধুরা , দুটি চোখ থাকার সুবিধা বিষয়ে একটু জানবো। দুটি চোখ দিয়ে একটি বস্তু দেখলে আমরা কেবলমাত্র একটি বস্তু দেখতে পায়, যদিও প্রত্যেকটি চোখ আপন আপন রেটিনায় প্রতিবিম্ব গঠন করে। কিন্তু মস্তিষ্ক দুটি ভিন্ন প্রতিবিম্ব কে একটি প্রতিবিম্বে পরিণত করে। দুটি চোখ থাকার জন্য দূরত্ব নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা যায় তাই একটি চোখ বন্ধ রেখে সুইয়ে সুতা পড়াতে খুব অসুবিধে হয়।
চোখ আমাদের এমন একটি অঙ্গ যার কাজ বলে শেষ করা যায় না। কিন্তু চোখের প্রতিটি অঙ্গ আলাদা আলাদা। তাই আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করলেও চোখের সব কাজ কিন্তু মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
তাই চোখের প্রতিটি অংশের স্নায়ু কোষ গুলো সরাসরি মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের সাথে সংযুক্ত। আমাদের উচিত আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গাণুটির প্রতি যত্ন নেওয়া এবং প্রতিটি অঙ্গানুর প্রতি খেয়াল রাখা।