আমরা আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়র করব ব্যাক পেইন, পিঠের বা মেরুদন্ডের ব্যাথা থেকে বাঁচতে মেরুদন্ড কি? ও মেরুদণ্ডের কাজ কি? আর কোমর ব্যাথার বিভিন্ন লক্ষণ ।
চলুন আমরা প্রথমে জেনে নিই
মেরুদন্ড কিঃ
“এটলাস থেকে কক্কিক্স পর্যন্ত প্রলম্বিত সুষমা কান্ড কে ঘিরে অবস্থিত একরাশি কশেরুকা নিয়ে গঠিত এবং দেহের অক্ষকে অবলম্বনকারী অস্থিময় অনমনীয় গঠনকে মেরুদন্ড বলে”
মেরুদন্ডের গঠনঃ
মেরুদণ্ডকে শিরদাঁড়া, স্পাইনাল, প্রভৃতি নামে অভিহিত করা যায়। মেরুদন্ড সাধারণত ৩৩ টি অস্থি নিয়ে গঠিত।
মেরুদন্ডের কাজঃ
আজকে আমরা মেরুদন্ডের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানবো।
- দেহ সুষ্ঠু সঞ্ছালনে মজবুত ও নমনীয় অবলম্বন হিসেবে কাজ করে এই মেরুদন্ড।
- মাথাকে অবলম্বন দেয়। কশেরুকা সংযোগের ক্ষেত্র সৃষ্টি করে দেহের পক্ষে কাজ করে।
- দেহের অঙ্গ চলাফেরায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- তা ছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন কাজে বিভিন্নভাবে মুভমেন্ট করা বা ঘোরাঘুরি করতে এই মেরুদন্ড খুব বেশি ভূমিকা রাখে।
মেরুদন্ড কমবেশি সবার রয়েছে। মেরুদন্ডের ঘাড, পিঠ, কোমরে ব্যথার অভিজ্ঞতা কমবেশি সবার আছে। বিভিন্ন কারণে অর্থাৎ মেরুদন্ডে বিভিন্ন সমস্যা হলে, এই থেকে আমাদের ঘাড ব্যাথা, পিট ব্যাথা, এ ধরনের সমস্যা গুলো দেখা যায়।
মেরুদন্ডের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ।
প্রাথমিকভাবে মেরুদন্ডে হালকা ব্যাথা হলেও পরবর্তীতে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। শরীরের অন্য অংশের তুলনায় মেরুদন্ডের ব্যথা সবার আগে প্রকাশ পায়।
প্রথমে দরকার মেরুদন্ডের কোথায় সমস্যা সে বিষয়ে জেনে, রোগ নির্ণয় করা তা না হলে এই ব্যথা বাড়তে থাকে। রোগের যন্ত্রণা আর সে সাথে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যয় অনেকে সহ্য করতে পারেনা।
মেরুদন্ডের গঠন অনুযায়ী মাথার খুলির নিচ থেকে ঘাড পর্যন্ত ৭টি হাড বা কশেরুকা নিয়ে গঠিত। পরবর্তী ঘাড থেকে কোমরের উপর পর্যন্ত ১২ টি হাড নিয়ে গঠিত। আর নিচের দিকে পাঁচটি হাড় নিয়ে গঠিত।
বিভিন্ন ভাবে আমরা আমাদের মেরুদন্ডে সমস্যা হয়ে থাকে, নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ
এখন আসা যাক মেরুদন্ডের সমস্যায় কি কি লক্ষণ গুলো আমাদের শরীরে দেখা যায়
- দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় ঘাড়ে ব্যাথা অনুভূত হওয়া।
- ঘাড হতে উৎপন্ন ব্যাথা হাতে ছড়িয়ে পড়া।
- প্রাথমিক পর্যায়ে হাতে ব্যাথা হলে । হাতের বিভিন্ন অংশে ঝিনঝিন অনুভব হওয়া। হাতের শক্তি কমে আসা।
- পর্যায়ক্রমে হাতের অসারতা ধীরে ধীরে বাড়া।
- হাড় দুর্বল হয়ে পড়া এবং কার্যক্ষমতা অনেকাংশে হারিয়ে যাওয়া।
- চূড়ান্ত পর্যায়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা।
এতক্ষন আমরা যে সকল লক্ষণগুলো বললাম তা সাধারণত মেরুদন্ডের ঘাডের হাড গুলোতে সমস্যা হলে।
কোমর ব্যাথার বিভিন্ন লক্ষণসমূহঃ
মেরুদন্ডের সমস্যার সাথে কোমর ব্যাথার লক্ষণ সমূহে অনেক টা মিল রয়েছে । তারপরও আপনাদের বুঝার জন্য বিস্তারিত শেয়ার করলাম ।
- দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমরে ব্যাথা অনুভূত হয়,
- কোমর থেকে উৎপন্ন ব্যাথা পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। পায়ের নিতম্ব ও মাংসপেশিতে ব্যথা অনুভূত হয়।
- পায়ের বিভিন্ন অংশে ঝিনঝিন অনুভূত হতে পারে।
- ধীরে ধীরে পা দুর্বল হয়ে পা এর কার্যক্ষমতা লোপ পেতে পারে।
- চূড়ান্ত পর্যায়ে মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করতে পারে।
বন্ধুরা এক্ষেত্রে আমাদের একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে মেরুদন্ড হল এমন একটি অঙ্গ যা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে দ্বিতীয় বার ঠিক করা অনেক বেশি দুঃসাধ্য। বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এত উন্নতি হওয়ার পরেও সঠিকভাবে মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে আগের মত ভালো করে নেওয়ার মতো ওষুধ এখনো ভালোমতো আবিষ্কার হয়নি।
তাই আমরা যখন কাজ করব তখন মেরুদন্ডতে যাতে কোন প্রেসার না পড়ে অর্থাৎ খুব সাবধানে কাজ করব। ঝুঁকে কাজ করার চেয়ে বসে কাজ করলে আমাদের মেরুদন্ড ঠিক থাকে। ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকব এর চেয়ে উত্তম দাঁড়িয়ে কাজ করা।
তাই বন্ধুরা আমাদের উচিত সচেতন হওয়া যাতে কোনো ধরনের সমস্যা আমাদের মেরুদন্ডের না হয়। কারণ এক্ষেত্রে প্রতিকার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই আমাদের প্রতিরোধ করার মত ইচ্ছা শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
ধন্যবাদ।