একজন প্রসূতি মা কিভাবে প্রথম ৪০ দিন নিজের যত্ন নিবেন

আজ একটি সচেতনতামূলক বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি, বিষয়টি হল একজন প্রসূতি মা কিভাবে প্রথম ৪০ দিন নিজের যত্ন নিবেন।জেনে নেওয়া যাক সেই গুরুত্বপূর্ণ দিনের কিছু বিষয় সম্পর্কে প্রিয় বন্ধুরা একজন গর্ভবতী মহিলা যখন ওনার সন্তান প্রসব করে তখন প্রথম ৪০ দিন অনেক বেশি কষ্টে কাটাতে হয় এই প্রসূতি মাকে। কারণ প্রসূতি মায়েদের জীবনযাপন খাবার-দাবারের উপর উনার বাচ্চা সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। তাই প্রসূতি মায়ের প্রতিটা কাজ  খুব বেশি সচেতনতার সাথে ফেলতে হয়।

এখন আমরা আপনাদেরকে যে সকল পরামর্শ দিব এই পরামর্শ গুলো অনুসরণ করলে এই কঠিন দিনগুলো আপনারা খুব সহজেই পার করে ফেলতে পারবেন।

প্রথমে ৪০ দিনে প্রসূতি মায়ের যত্ন যেভাবে নিবেনঃ

১।

যে বিষয়টির প্রতি একজন প্রসূতি মায়ের খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো খাবার দাবার। প্রথম দুই সপ্তাহ ধরে একজন প্রসূতি মাকে খাবার-দাবারে অনেক বেশি বৈচিত্র আনতে হবে। কারণ বাচ্চা যেহেতু মা থেকে  দুধ পান করবে তাই মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ বের হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি প্রসূতি মায়ের উচিত খাবার-দাবারের মধ্য দিয়ে এই তরল পদার্থের অভাব পূরন করে ফেলা।  এখন আপনাদের জন্য আমাদের পরামর্শ হলো কিভাবে আপনারা এই অভাব পূরণ করতে পারবেন।

এ জন্য অনেকগুলো খাবার রয়েছে যেমন ধরুন মাছা  থেকে  ঝুলে পড়া  লাও গুলোতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল রয়েছে। তাছাড়া তো ভিটামিন আছেই। যদি আমরা সবজির মতো রান্না করে প্রতিবেলায় না হোক অন্তত দিনে একবার হলেও খায়, তাহলে আমাদের শরীরে মিনারেলের অভাবে পূরণ হয়। এছাড়া প্রতিটা মায়ের উচিত খাবার-দাবারে সুষম বন্টন করা। অর্থাৎ ভিটামিন, শর্করা, আমিষ ও ফ্যাট ব্যালেন্স টিক করা।  কারন প্রতিটা মায়ের খাবারের উপর প্রতিটা শিশুর খাবার নির্ভর করে।  তাই প্রতিটা মাকে খাবারের ক্ষেত্রে সুষম খাবার নিশ্চিত করতে হবে।

এমন অনেক ধরনের খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো একজন প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ উৎপাদনের ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। অথবা দুধ শুকিয়ে ফেলতে পারে এই ধরনের খাবার গুলো আমাদের এড়িয়ে চলতে হবে। অর্থাৎ টক জাতীয় খাবার পরিহার করা। কারন টক জাতীয় খাবারে প্রসূতি মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও একজন প্রসূতি মায়ের উচিত দুধজাতীয় খাবার গ্রহণ করা। এখন প্রসূতি মায়ের খাবার দাবারের সাথে সাথে আরও যে কাজটি করতে হবে সেটি হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সর্বদা পরিচ্ছন্ন থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু মাকে আক্রমণ করতে পারবে না। আর মা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা মানে হল দুগ্ধজাত শিশুটি সকল ধরনের রোগ থেকে বেঁচে থাকা

অনেক খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো একজন প্রসূতি মায়ের দুধ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই ওই ধরনের খাবারগুলো খেতে হবে।

২। ব্যায়াম

পাশাপাশি একজন প্রসূতি মাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম যদি করতে না পারে অন্ততপক্ষে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করতে হবে।  অলস ভাবে বসে থাকা কোনভাবে একজন প্রসূতি মায়ের জন্য কাম্য নয়। তাছাড়া একজন প্রসূতি মাকে তার বাচ্চার প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখা উচিত। কারণ বাচ্ছাদের এ সময়ে অনেক ধরনের পরিবর্তন বা বৈচিত্র আসে। তাই একজন প্রসূতি মাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হয়, তার বাচ্চাকে নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে দিতে। এজন্য একজন প্রসূতি মায়ের খাবার দাবারের তালিকায় ওই ধরনের খাবার গুলো থাকা উচিত।

৩। ঘুম

প্রসূতি মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে যেহেতু বাচ্চাদের ঘুমের তখন কোন টাইম টেবিল থাকেনা অর্থাৎ প্রথম ৪০ দিন একজন নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য ১৫  থেকে ১৬ ঘণ্টা রাতে দিনে মিলে ঘুমানো উচিত।  অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬  থেকে ১৭ ঘণ্টা একজন বাচ্চার ঘুমানো উচিত। তাই প্রসূতি মায়েদের উচিত ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট কোন সময়কে নির্ধারণ না করা।

বাচ্চারা যে সময় ঘুমায় মায়েদের উচিত সে সময় ঘুমিয়ে নেওয়া অর্থাৎ মায়েদের কোনোভাবেই উচিত নয় রাত জেগে বাচ্চার যত্ন নেওয়া।  এতে করে মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। যদি প্রসূতি মায়েরা নিয়মিত না ঘুমায়, তাহলে মায়েদের মানসিক শান্তির জন্য একজন প্রসূতি মায়ের প্রতিদিন খাবার দাবারের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম এবং ঘুমের দরকার। যাতে মায়ের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ যদি সুনিশ্চিত করা যায়।  তবেই একজন বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

তাহলে বন্ধুরা,

উপরে যে সকল পরামর্শ আপনাদের জন্য রয়েছে আপনারা এই সকল পরামর্শ যদি অনুসরণ করেন হলে প্রথম ৪০ দিনের ক্রাইসিস মোমেন্ট আপনারা খুব সহজে পার করতে পারবেন। যে খাবারগুলোর দ্বারা প্রসূতি মায়ের মানসিক প্রশান্তি লাভ হয়।

ধন্যবাদ