অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক কেন হয়

সুপ্রিয় বন্ধুরা

আজ যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব সেটি মেয়েদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  বিষয়টি হলো অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক।

এই বিষয়ে কথা বলতে গেলেই প্রথমে আমাদের জানতে হবে   অনিয়মিত পিরিয়ড কাকে বলে???????

তাহলে বন্ধুরা চলুন জেনে নেওয়া যাক অনিয়মিত পিরিয়ড বলতে আমরা কি বুঝি??????

অনিয়মিত পিরিয়ড সাধারণত হরমোনের ভারসাম্যহীনতার একটি লক্ষণ। একটি নিখুঁত মাসিক চক্র ২৮ দিন দীর্ঘ হয় সুতরাং যদিও ২৯ তম দিন তারা পায়। তবে এটি একটি স্বাস্থ্যকর মাসিক চক্র থাকার লক্ষণ। কিন্তু যদি আপনি ২১ দিন বা তার আগে আপনার পিরিওড পান এবং আপনার পিরিওড মেয়াদ এর দিন আরও বেশি সময় ধরে থাকে, তবে আপনার অনিয়মিত মাসিক চক্র রয়েছে।

এক মাসের প্রথম দিন থেকে আরেক মাসের প্রথম দিন পর্যন্ত যে সময় সেটাই হলো এক মাসিক চক্র। সাধারণত ২৮ দিন পর পর মাসিক হয় যদিও ২১ থেকে ৩৫ দিন অন্তর পর্যন্ত স্বাভাবিকতার তারতম্য হতে পারে। একবার মাসিক হলে সাধারণত ২-৫ দিন থাকে এবং এই সময় টার যেকোনো একটার অনিয়ম হওয়া মানে অনিয়মিত মাসিক।

কেনো অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে?

বিভিন্ন কারণেই অনিয়মিত মাসিক হতে পারে

  • সাবালিকা হওয়ার প্রথম এক থেকে দুই বছর ডিম্বাশয়ের অপরিপক্কতার জন্য এই ধরনের হতে পারে।
  • মেন্স হওয়ার আগের চার থেকে পাঁচ বছর হরমোনের তারতম্যের জন্য হতে পারে।
  • কিছু কিছু পিল খাওয়ার সময় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য এটি হতে পারে।
  • বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় হরমোনের তারতম্যের জন্য এরকমটা হতে পারে।
  • খুব বেশি ব্যায়াম করলে ও অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে।
  • অতিরিক্ত টেনশন অনিয়মিত পিরিয়ডের মহা কারন।
  • হঠাৎ খুব দ্রুত ওজন বেড়ে গেলেও এ ধরনের হতে পারে।
  • থাইরয়েড রোগীদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত পিরিয়ড প্রধান লক্ষণ।
  • স্ত্রী রোগ যেমন জরায়ু টিউমার, জরায়ুর প্রদাহ ইত্যাদি।

এছাড়াও আরো অনেকগুলো কারণ রয়েছে যার কারণে মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে।  সেগুলো চলুন জেনে নেই……………

  • চাপ এর উৎস স্থল পিরিয়ডের সময় ডিম্বস্ফুটন কে প্রতিরোধ করতে পারে এবং অন্যান্য প্রজনন হরমোন উৎপাদন উচ্চচাপের কারণে বাধাগ্রস্ত হয় ফলস্বরূপ আপনার গর্ভাশয়ের আস্তরণ যেভাবে তৈরি করা উচিত তা তৈরি করে না এবং আপনি সময়মতো আপনার পিরিওড পান না।
  • অস্বাস্থ্যকর খাবার যেমন আপনি যদি ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ করেন যা শরীরে বিভিন্ন হরমোনের কার্যকারিতা কে উত্তেজিত করে, এটি পরবর্তীতে অনিয়মিত মাসিক চক্রের জন্য গুরুতরভাবে দায়ী।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে কাজ করলে অথবা অতিরিক্ত চাপ নিয়ে ব্যায়াম করলে আমাদের থাইরয়েড এবং পিটুইটারি গ্রন্থি গুলোর স্বাভাবিক কার্যকারিতা হ্রাস পায়। যার ফলে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়।
  • থাইরয়েডের সমস্যার গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে তাদের থাইরয়েডের সমস্যাগুলো থেকে মুক্ত থাকা মহিলারা প্রায় তাদের পিরিয়ড অনিয়মিত হয় বা মিস করেন।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গুলো পিরিয়ডের সময় সরাসরি প্রভাব ফেলে। এটি মাসিক চক্র কে হালকা করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিরিওড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়।
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এটি একটি চিকিৎসামূলক অবস্থা যাতে ডিম্বাশয় খুব ছোট হয়। এই অবস্থায় ভোগা মহিলারা অনিয়মিত মাসিক চক্রে ভোগেন।
  • আপনার শরীরের বিএমআই ১৮ ও ১৯ এর নিচে নেমে গেলে আপনার শরীরে চর্বির কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে।
  • হঠাৎ ওজন লাভ করা বা অতিরিক্ত ওজন যদি অল্প সময়ে লাভ করেন যা শরীরের হরমোন এর স্বাভাবিক কার্যক্রম কে প্রভাবিত করতে পারে এর মধ্যে যৌন হরমোন অন্তর্ভুক্ত। এটি অনিয়মিত পিরিয়ড এর কারণ হতে পারে।
  • কিছু কিছু খাবারের এলার্জি আপনার অনিয়মিত মাসিক চক্রের জন্য দায়ী।
  • সবচেয়ে বেশি অনিয়মিত পিরিয়ড এর জন্য দায়ী, সেটি হল বয়স। দেখা গেছে যে যখন একটি মেয়ে প্রথমবার পিরিয়ড হয় তখন তার স্বাভাবিক হতে কিছু সময় লাগে এটি শুধুমাত্র অল্প বয়সের মেয়েদের জন্য। বয়স্ক মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায়।তাই অনিয়মিত পিরিয়ডের জন্য এ সময় চিন্তিত হবেন না।

উপরের পরামর্শগুলো থেকে আপনারা জেনে গেলেন কেন মেয়েদের অনিয়মিত পিরিয়ড হয়ে থাকে।

ধন্যবাদ বন্ধুরা