শুধু বাংলাদেশেই নয় পুরো বিশ্বের মধ্যে একটি সার্বজনীন সমস্যার নাম হল ডায়াবেটিস।ছোট বড় যে কোন বয়সে যে কারোর ডায়াবেটিস হতে পারে । তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ডায়াবেটিস বাড়ার প্রবণতা বেশি ।
আমাদের নিজের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে জানতে হবে ডায়াবেটিস কি? কেন হয়?
তাই আজকে আমি আপনাদের শেয়ার করব ডায়াবেটিস কি????
কেন , কখন ও কোন অবস্থায় আমাদের ডায়াবেটিস হয় ?
তাহলে বন্ধুরা প্রথমে জেনে নিন ,
ডায়াবেটিস কি????
ডায়াবেটিকস একটি বিপদজনক রোগ। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের সম্পূর্ণ আপেক্ষিক ঘাটতির কারণ বিপদজনক গোলযোগ সৃষ্টি হয়।ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং একসময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়া বলে।
এ সময় রোগীর রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেড়ে যায়। রোগীর রক্তে প্লাজমার পরিমাণ অভুক্ত অবস্থায় ৫.৫ মিলি এবং খাবার পর ৭.৮মিলি থাকে।
অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৭.১ মিলির বেশি হলে এবং খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে রক্তের প্লাজমায় গ্লুকোজের পরিমাণ ১১.১ এর বেশি হলে ডায়াবেটিস বেড়ে গেছে বলে গণ্য করা হয়।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদঃ
ডায়াবেটিস কে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করলে একটি কে আমরা বলে থাকি
টাইপ-১ ডায়াবেটিস এবং
অন্যটি হল টাইপ -২ ডায়াবেটিস
এখন আমরা জানবো,
কি কি কারণে আমাদের ডায়াবেটিস হয়ঃ
সাধারণত আমাদের ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন অভ্যাসগুলো দায়ী।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস হওয়ার কারণঃ
তারমধ্যে টাইপ-১ ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ব্যায়াম না করা ।
নিয়মিত শারিরীক ব্যায়ামের অভাবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস হয় ।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ঃ
নিয়মিত ব্যায়াম করলে টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন কমে যায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করার মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে রাখা সম্ভব । তাই নিয়মিত শারিরীক ব্যায়াম করলে টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার কারণঃ
সেটি হলো মানসিক চাপ । যে সকল কারণে টাইপ-টু ডায়াবেটিস হয় তার মধ্যে একটি হলো মানসিক চাপ ।
এছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ , পারিবারিক জটিলতার অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে আমাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগ হয়ে থাকে।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ঃ
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণঃ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের কৌশল শিখুন। খুব বেশি মানসিক চাপ থাকলে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন, অথবা লম্বা করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে অভ্যাস করুন এবং তা প্রতিহত করার চেষ্টা করুন।
এতে করে আপনার মানসিক সমস্যা কিছুটা হলেও সেরে যাবে এবং তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার একটি ভালো উপায় হয়ে যাবে।
পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া,
আমাদের দৈনিন্দন পরিশ্রমের পর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন এর তথ্য অনুযায়ী ঘুম কম হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই ঘুম খুব দরকারি।
এখন এই রোগটি আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো বা পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার ফলে যে আমাদের ডায়াবেটিস হতে পারে সে বিষয়টি আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো তাহলে বন্ধুরা দেখা যাক এই থেকে আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারি ডায়াবেটিস।
আমাদের উচিত হবে অবশ্যই সুষম সাউন্ড স্লিপ অর্থাৎ আমাদেরকে টেনশন ফ্রি হয়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
নিয়মিত খবার গ্রহণঃ
রাতে খাওয়ার পর-পরই ঘুমাতে যাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই সমস্যাটি আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো।
এক বেলা পেট ভরে খেয়ে অন্য সময় অল্প অল্প করে বিরতি দিয়ে খাওয়া দরকার নাই। কারণ সেটি হলো সকালে নাস্তা না খাওয়া ।
সকালের নাস্তা দিনের খাবারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল মানুষ সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় ।
এখন এই সমস্যাটি আমরা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস রোগ থেকে আমরা নিজেদেরকে বাঁচিয়ে নিতে পারব ।
সেটি হলো বিশেষজ্ঞরা সকালের নাস্তায় ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত মাশরুম, টমেটোর মত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অতিরিক্ত চিনি বর্জনঃ
২০১৪ সালে ন্যাশনাল জার্নাল, একটি গবেষণা প্রকাশ করে।
গবেষণায় বলা হয় বাজারে যেসব জিনোমের বিকল্প চিনি পাওয়া যায় তার প্রায় সবগুলোতেই অতিরিক্ত সূরা পাওয়া গেছে যা রক্তে শর্করার পরিমাণকে বাড়িয়ে দেয়।
চিনির পরিবর্তে চা বা কফিতে বিকল্প চিনি বা আর্টিফিশিয়াল সুইচ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রক্রিয়াজাত খাবারঃ
প্রক্রিয়াজাত খাবারে রয়েছে অনেক বেশি ফ্যাট। বলতে গেলে খারাপ ফ্যাট যা দেহের সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বাড়িয়ে তোলে।
বিশেষ করে অরেঞ্জ সুইট এ ধরনের খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর এবং স্বাভাবিক মানুষ যদি এই ধরনের খাবার খায় তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা অনেক গুণে বেড়ে যায়।
তাইব প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এখন চিকিৎসকরা এই বিষয়ে বলেছেন যে,
জীবনযাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-নীতি মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে উল্লেখিত পরামর্শগুলো মেনে চলুন এবং এতে সুস্থ ব্যক্তিরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন না । উপযুক্ত নিয়মগুলো মেনে চলুন সঠিকভাবে , তাহলেই আপনারা ডায়াবেটিসকে নিজেদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবেন।
ধন্যবাদ