কালোজিরার আরবি নাম : হাব্বাতুস সওদা, এবং ইংরেজি নাম: (blackseed) তবে বাংলার মানুষেরা একে কালোজিরা নামেই চেনে। কালোজিরা আমাদের সকলেরই পরিচিত একটি খাদ্য কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানে। আপনি কি জানেন কালোজিরার তেল কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। কালোজিরা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন করে শরীরকে সতেজ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন তোমরা কালোজিরার ব্যবহার করো এটি মৃত্যু ব্যতীত সকল ধরনের রোগের জন্য মহাঔষধ গুণসম্পন্ন। কেবল স্বাস্থ্যের জন্যই এটি কার্যকারী না দেহের বাহ্যিক অংশ যেমন চর্মরোগ, চুল পড়া বন্ধ ও ত্বকের জন্য ও শারীরিক নানা সমস্যার জন্য এটি বেশ কার্যকারী। বাংলা গাইডস আপনাদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কে গাইডলাইন দিয়ে আসছে তো চলুন আজকে জেনে নেই কালোজিরা ও এর তেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।
কালোজিরার পুষ্টিগুণ
কালোজিরার মধ্যে থাকা উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান উপাদান হলো: আমিষ 21 শতাংশ, শর্করা রয়েছে 38 শতাংশ, ভেজশ ও তেল-চর্বি হয়েছে 35 শতাংশ, এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পরিমাণমতো বিদ্যমান। কালোজিরার মধ্যে আরও বিভিন্ন ধরনের উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যেমন : প্রোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম ও আয়রন,ফসফরাস, কপার, জিংক বিভিন্ন ধরনের এসিড বিদ্যমান রয়েছে
আসল কালিজিরার তেল চেনার উপায়
প্রথমে, আসল কালোজিরার তেল চেনাটা বড় কষ্টকর কারণ এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের উপাদান মিশ্রিত থাকতে পারে। এই তেল চেনার একটি ঘরোয়া উপায় আছে।
কালোজিরার তেল পরীক্ষা করার জন্য প্রথমে আপনার একটি গ্লাস অথবা মগ ও চামচ লাগবে। প্রথমে পাত্রটিতে এক চামচ তেল দিন তারপর পাত্রটির মধ্যে অর্ধেক পানি দিন এবং কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করার পরে যদি পানির রঙের কোন পরিবর্তন না হয় তাহলে বুঝবেন সেটি খাঁটি কালোজিরার তেল। আর যদি পানির রং পরিবর্তন হয় এবং কালচে আকার ধারণ করে তাহলে বুঝবেন সেটি নকল।
কালোজিরার তেল কোথায় পাওয়া যায়
এছাড়াও, এই তেল আপনারা যে কোন আয়ুর্বেদিক দোকানে পাবেন অথবা ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। আজকাল তো সবকিছুই আছে আমাদের হাতের নাগালে যেমন অনলাইন আপনি যদি অনলাইনে সার্চ করেন তাহলে দারাজ ও বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স ওয়েবসাইট পাবেন। সেখান থেকে অর্ডার করতে পারেন কালোজিরার তেল।
কালোজিরার তেল বানানোর ঘরোয়া নিয়ম
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কালোজিরার তেল তৈরি করা খুবই কষ্টকর। কেননা আজকাল বাজারে আয়ুর্বেদিক দোকানে অনলাইনে এই তেল পাওয়া যায় চাইলে আপনি অর্ডার করতে পারেন। অথবা আপনি যদি খাঁটি বিশুদ্ধ কালোজিরার তেল তৈরি করতে চান তাহলে এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করতে পারেন।
- প্রথমে কালোজিরার দানা গুলো (250গ্রাম অথবা আপনার ইচ্ছামত) অল্প আগুনের উত্তাপে ভেজে নিন।
- ভাজা হয়ে গেলে খুব অল্প পরিসরে মিহি না করে বেটে নিন সব বাটা হয়ে গেলে পুনরায় আবার বেটে নিন চটচটে না হওয়া পর্যন্ত।
- তেল চটচটে হয়ে গেছে কিনা একবার হাত দ্বারা পরীক্ষা করে নিবেন।
- তারপরে বাটা কালোজিরা সাথে খাঁটি আখের চিনি (যা দেখতে লালচে রঙের) দুই চামচ চিনি মিশ্রিত করুন (250 গ্রাম) বাটা কালোজিরার সাথে (যদি খাঁটি আখের লালচে রঙের চিনি না পান তাহলে সাধারন চিনি মিশিয়ে হবে )
- মেশানোর পর চুলায় অল্প আগুনে 5 মিনিট রেখে দিতে হবে।
- তারপর চুলা থেকে নামিয়ে দুই থেকে তিন চামচ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন এবং অল্প আগুনে (15 মিনিট) আবার অল্প পরিমান তাপ দিন।
- ½ ঘন্টা পর ঠাণ্ডা হলে একটা পরিষ্কার কাপড় ও বাটি নিন এবং বাটির উপরে কাপড়টি রাখুন এবং পাত্রের কালোজিরা গুলো কাপড়ের উপরে ডেলে দিন (পুটলি বানিয়ে নিন )
- খুব জোরে চাপতে থাকুন এবং চাপ দেওয়া শেষ হলে কালোজিরা গুলো অন্য পাত্রে রাখুন।
- যে তেল বের হয়েছে এই তেলের সাথে পানি মিশ্রিত রয়েছে এই মিশ্রিত পানি দূর করার জন্য এই তেলটুকু রোদ্রে রেখে দেন। অথবা চুলায় অল্প পরিমান তাপ দিন যাতে পানি জলীয়বাষ্প আকারে উড়ে যায়।
এই পদ্ধতিতে আপনি ঘরোয়াভাবে কালোজিরার তেল বানাতে পারেন। তবে আজকাল বাজারে কালোজিরা তেল পাওয়া যায় যা মেশিন দ্বারা তৈরি।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার উপকারিতা
সঠিক নিয়মে কালোজিরা ও তেল সেবন করলে বিভিন্ন রোগ থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। বিভিন্ন রোগ নিরাময় কালোজিরার উপকারিতা ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল:
- স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে
আজকাল একটা জিনিস লক্ষ্য করলে দেখা যায় অধিকাংশ মানুষই স্মরণশক্তি সমস্যায় ভোগে ছোট থেকে বড়। যেমন, ছোটদের পড়াশোনা অমনোযোগিতা এবং বড়দের স্মরণশক্তিতে চাপ বেড়ে গেছে যে অনেক সময় অনেক কিছু ভুলে যায়। এই জন্য আপনি যদি এই তেল নিয়মিত সেবন করেন এটি স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে বিশেষ কার্যকরী।
স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা তেল সেবন করার নিয়ম: মধু অথবা পুদিনা পাতার রস, কমলালেবুর রস, এই তেলের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে 1 চা চামচ সেবন করলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রে
ডায়াবেটিস মারাত্মক রোগ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য কালোজিরার তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন সকাল বেলায় 1 কাপ চা, গরম জল, অথবা দুধের সাথে এক চামচ পরিমাণ তেল মিশিয়ে সেবন করুন।
- রক্ত সঞ্চালন এর ক্ষেত্রে
প্রতিদিন নিয়মিত কালোজিরা সেবনে করলে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয় ফলে মস্তিষ্ক রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে।
- স্তনের দুধ বাড়ায়
যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই তাদের জন্য কালোজিরা বেশ কার্যকরী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রসূতি মায়েদের বুকের দুধ থাকে না সন্তান প্রসবের পর। তারা যদি প্রতিদিন শোয়ার আগে পরিমাণমতো কালোজিরা বাটা ভাতের সাথে মিশিয়ে খান তাহলে 10 থেকে 15 দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে।
- প্রচন্ড মাথা ব্যথা
মাথা ব্যাথা দূর করতে কালোজিরার ভূমিকা অপরিসীম। অনেক সময় যাদের হঠাৎ মাথা ব্যাথা করে তারা কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে প্রলেপ দিলে মাথা ব্যাথা থাকে পরিত্রান পাওয়া যায়। এছাড়াও তারা যদি প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবন করলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে মাথাব্যথা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।
- বাত ব্যথায়
বাত ব্যথা আজকাল বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ছোট থেকে বড় সব ধরনের মানুষেরই হয়ে থাকে । তবে যারা বাতব্যথায় সমস্যায় আছেন তারা ব্যথার স্থানে নিয়মিত এই তেল মালিশ করলে ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
- যৌন সমস্যা
কালোজিরা নারী ও পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে নিয়মিত কালোজিরা ও মধু একসাথে সেবন করলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- চর্মরোগ সারাতে
যাদের চর্ম রোগের সমস্যা ও শরীর চুলকায় তারা যদি নিয়মিত কালো জিরার তেল মালিশ করেন তাহলে চর্মরোগ চুলকানির সমস্যা দূর হয়।
যাদের প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে প্রস্রাব পরিষ্কার হয় না তারা যদি নিয়মিত কালিজিরা খান তাহলে প্রস্রাব পরিষ্কার হবে।কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
যারা পেট খারাপের সমস্যায় ভুগতেছেন তারা 500 গ্রাম কালিজিরা শুখিয়ে গুরু করে 5 থেকে 7 চামচ দুধের সাথে 2 চামচ কালো জিরে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে এক টানা সাতদিন খেলে পেট খারাপের সমস্যা দূর হয়।
- হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট সমস্যা
যারা হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট সমস্যার ভুগতেছেন তারা নিয়মিত প্রতিদিন সকালে এক কাপ গরম জল অথবা চায়ের সাথে এক চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে পান করলে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।
- ঠান্ডা ও সর্দি সমস্যা
নিয়মিত কালোজিরা ও কালোজিরার তেল সেবন করলে ঠান্ডা সর্দি শুষ্ক কাশি ইত্যাদি সমস্যা দূর হয়। এক্ষেত্রে আপনি মধু, লেবুর রস, কমলালেবুর রস, অথবা গরম পানির সাথে কালোজিরা তেল মিশিয়ে ছেলে ঠান্ডা সর্দি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এছাড়াও কালোজিরার 6 টি মহা ঔষধি গুন রয়েছে
- বায়ু নিশারোক: এটা পেটে জমা বায়ু নির্গত করে দেয়।
- খাদ্য হজমকারী: খাদ্য হজম করতে বেশ কার্যকারী।
- পাকাশয় শক্তি বর্ধনকারী: এটি পাকস্থলীর হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং নিশ্চিত এবং দুর্বল দেহকে শক্তিশালী করে তোলে।
- কফ জনিত যাবতীয় রোগনাশক: কফ শ্লেসা বা রস শোষণ করে নেয়।
- পিত্তদোষ নাশক।
- মাসিক স্রাব স্বাভাবিকারক।
- জন্ডিস লিভারে বিভিন্ন সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য নিয়মিত কালোজিরা খান।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে কালোজিরা
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছে যে, কালোজিরার তেলের মধ্যে এমন কার্যকরী উপাদান আছে যা ক্যান্সারের কোষ তৈরি টক্সিন উপাদান এর বিরুদ্ধে কার্যকরী। এবং ক্যান্সারের জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। এছাড়াও গর্ভবর্তী মহিলারা যদি বাচ্চা প্রসবের পর কালোজিরা চিবিয়ে খায় তাহলে তার পেশাবের বেগ বাড়বে ফলে তার গর্ভথলি দ্রুত পরিষ্কার হবে। এবং এই পেশাবের সাথে দেহে নানারকম দূষিত পদার্থ বের হয়ে যাবে।
এছাড়াও, প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে কালোজিরা সেবন করলে মাথা সকল প্রকার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং সাথে সাথে কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
রূপচর্চায় কালোজিরার তেল
এছাড়াও, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি রূপচর্চায়ও কালোজিরা তেলের উপকারিতা অপরিসীম নিম্নে এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে:
- মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে:
মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে কালোজিরা তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে মেখে এক ঘণ্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন এটি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কার্যকারী।
- চোখের পাপড়ির ঘনত্ব বাড়াতে:
অনেকেই চান ঘন কালো চোখের পাপড়ি বিশেষ করে মেয়েরা চান চোখের পাপড়ির ঘনত্ব বাড়াতে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে কয়েক ফোঁটা তেল চোখের পাপড়িতে ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন এই তেল চোখের ভিতর না যায়।
- ব্রণের সমস্যায়:
আজকাল ছেলে ও মেয়েদের ব্রণের সমস্যা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই এই ব্যস্ত জীবনে ব্রণের সমস্যা দূর করতে এই তেল এ থাকা এন্টিমাইক্রোবিয়াল ত্বকের ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করে। 1 গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই তেল 58% জীবাণু ধ্বংস করে প্রথম সপ্তাহে আর নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে পুরোপুরি কমে যায়।
- একজিমা দূর করতে:
একজিমা ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর কালোজিরা তেলে থাকা এন্টি-বায়টেরিয়াল কমপ্লেক্স ত্বকের ভিতর থেকে একজিমার সেলগুলোকে ধ্বংস করে।
- সোরিয়াসিস:
ত্বকের সোরিয়াসিস রোগটি হলে চুলকানি সহ দাগ পড়ে যায় ফলে এই তেল রোগটি নির্মূল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- শরীরে ছুলি দূর করতে:
আজকাল শরীরে ছুলির সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে এই সমস্যা দূর করতে এক টুকরো আপেল আক্রান্ত স্থানে ঘষে নিতে হবে। তারপর সেই স্থানে কালোজিরা তেল মালিশ করতে হবে নিয়মিত মালিশ করা ছুলি দূর হবে।
- দাড়ি গজাতে:
আমরা অনেকেই চাই সুন্দর দাঁড়ি সুন্দর ঘন কালো কুচকুচে দাড়ির জন্য এই তেল বিশেষ উপকারী।
- ত্বকের যত্নে:
ত্বকের যত্নে এই তেলের উপকারিতা অপরিসীম নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করলে ত্বকে থাকা বিভিন্ন জীবাণু ধ্বংস হয়। এই তেল শরীরে মালিশ করার আগে গোসল করে নিন শরীর ভালো করে ধৌত করে তারপরে তেল মালিশ করুন। এই তেল ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
চুলের যত্নে কালোজিরার তেল
আজকাল দেখা যায় অল্প বয়সে চুল পড়া চুলের গোড়ায় বিভিন্ন জীবাণুর যেমন সোরিয়াসিস ও বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। এতে মাথায় খুশকি চুলের গোড়ায় ত্বক শুকিয়ে যায় ফলে চুল পড়া বৃদ্ধি পায় এর অন্যতম কারণ হলো চুলের গোড়ায় পুষ্টি ঠিকমতো না পাওয়া, চুল দুর্বল হওয়া, চুলের আগা ফেটে যাওয়া অবশেষে টাক সমস্যায় পরিণত হওয়া।
এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া যেমন চুলে কালোজিরার তেল, অ্যালোভেরা, নারিকেল তেল, পেঁয়াজের রস লেবুর রস অল্প পরিমাণ চিনি ইত্যাদি উপাদানগুলো সঠিক নিয়মে চুলের গোড়ায় মালিশ করলে চুল পড়া বন্ধ হয়। চুলে পুষ্টি গুণ বৃদ্ধি পায় চুল ঘন হয় এবং টাক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
এছাড়াও, আপনি যদি লেবুর রস ও তেল মিশ্রিত করে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে মালিশ করেন তাহলে লেবুতে থাকা ভিটামিন সি চুলের পুষ্টি বৃদ্ধি করে চুল পড়া রোধ করে। এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
কালোজিরা সম্পর্কে প্রশ্ন
অনেক লোকজন আছে যারা কালোজিরা সম্পর্কে প্রশ্ন করে নিচে কিছু প্রশ্ন উত্তর যোগ করা হয়েছে যা পড়ে আপনারা কালোজিরা সম্পর্কে ভালো ধারণা পান।
কালোজিরা প্রতিদিন খেলে কী উপকার?
কালোজিরা প্রতিদিন খেলে কী উপকার হবে কিভাবে খাবেন নিচে তার একটি গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে। আপনি যদি এই নিয়মটি ফলো করেন তাহলে কালোজিরার অনেক উপকার সম্পর্কে জানতে পারবেন।
- মধু ও কালোজিরা
মধু ও কালোজিরা নিয়ে অনেক গাইডলাইন আছে অনলাইনে ইউটিউবে অনেকেই অনেকের মত বক্তব্য দিয়েছেন। মধু কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে এই না যে আপনি প্রতিদিন পরিমাণের চেয়ে বেশি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে যে কোন জিনিসের একটি মাত্র আছে।
পরিমাণমতো মধু ও কালোজিরা প্রতিদিন সকাল বেলায় এক চামচ মধু ও চার পাঁচটা কালোজিরার দানা মিশিয়ে সকালে ও রাতে খাওয়ার পর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও যাদের যৌন সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কালোজিরা ও মধু খেলে যৌন রোগ থেকে অনেকটাই সুস্থ হওয়া যায়।
- পান ও কালোজিরা
পান ও কালোজিরা একসাথে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এটি যাদের যৌন সমস্যায় ভুগতেছেন তারা পান কালোজিরা একসাথে খেলে যৌন সমস্যা মুক্তি ও কাম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- রসুন ও কালোজিরা
আপনি যদি নিয়মিত রসুন কালোজিরা খান তাহলে এটি পুরুষের বীর্যে শুক্রাণু বৃদ্ধি করে বীর্য গাঢ় করে। এছাড়াও রসুন কালোজিরা একসাথে খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়।
কালোজিরার কি কোনো অপকারিতা আছে?
আমরা সকলেই জানি যে কালোজিরা খাওয়া ভালো স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। কিন্তু আমার জানামতে কালোজিরা তাই বলে বেশি খাবেন না কোন কিছুই বেশি খাওয়া ভালো না। নিম্নে কিছু টিপস শেয়ার করা হয়েছে:
- গর্ভ অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে কালোজিরা সেবন করা উচিত নয়। তবে বাচ্চা প্রসবের পর স্তনের দুধ বৃদ্ধির জন্য কালোজিরা খেতে পারেন।
- দুই বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের কালোজিরা না খাওয়াটাই ভালো। তবে কালোজিরা তেল বাহ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যাবে।
- যাদের আলসার আছে তারা কালোজিরা না খাওয়াটাই ভালো।
- যাদের বুক জ্বালাপোড়া করে গ্যাসের সমস্যা হয় তারা ভাতের সাথে কালোজিরা খাওয়া টা ভালো।
শেষ কথা
আশা করি আপনারা কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন। কালোজিরা মধ্যে থাকা এমন ঔষধি গুণ রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই কালোজিরা নিয়মিত খান। আর বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কে বাংলা গাইডস ডটকম আপনাদের মাঝে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ব্লগ পাবলিশ করবে। তাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইল।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম