বিভিন্ন ত্বকের যত্নে এলোভেরার উপকারিতা

বিভিন্ন ধরনের ত্বকের যত্নে এলোভেরা বা ঘৃতকুমারীর  উপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিতভাবে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। তার আগে একটি বিষয় আপনাদের সাথে পরিষ্কার করে নিতে চাই সেটি হল ত্বকের বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে। আমাদের ত্বক একেকজনের একেক রকম হয়ে থাকে। কারো ত্বক বেশি শুষ্ক,কারো ত্বক তৈলাক্ত। তৈলাক্ত ত্বক অনেক বেশি সেনসিটিভ। এই ধরণের ত্বকে কোন কিছু ব্যবহার করতে পারে না। আবার অনেকের দীর্ঘদিন বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে মুখে অনেক বেশি দাগ হয়ে যায়। আবার অনেকের তো রয়েছে ব্রণের সমস্যা। এর পাশাপাশি অনেক ধরনের ত্বক রয়েছে যেগুলো পরিচর্যার অভাবে খুব বেশি খারাপ হয়ে গেছে। তাই সব ধরনের ত্বকের যত্নে এলোভেরা আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে থাকে।  আজকে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা অনুযায়ী এলোভেরার কার্যাবলী আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।

তাহলে জেনে নেওয়া যাক…………

কোন ধরনের ত্বকের জন্য এলোভেরা কিভাবে ব্যবহার করা উচিতঃ

একনি বা ব্রণ জনিত রোগ রয়েছে এই ত্বকের জন্য এলোভেরা কিভাবে কাজ করে থাকে?

  • বিভিন্নভাবে এলোভেরা কে আমরা ব্রণ জর্জরিত ত্বকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। যেমন ধরুন ব্রণের সমস্যা রয়েছে এমন ত্বকের জন্য……
  • বাহির থেকে এসে খুব সহজে এলোভেরার তৈরি আইস বার ব্যবহার করতে পারেন। আমরা অ্যালোভেরার আইসবার গুলো তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারি আর বাহির থেকে এসে এই আইসবার গুলো আমাদের ত্বকের উপর লাগালে খুব সহজে বিভিন্ন ধরনের ধুলোবালি চলে যাবে।
  • পাশাপাশি এলোভেরার মধ্যে থাকা উপাদান গুলি ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ রোধ করতে সহায়তা করবে।
  • এর পাশাপাশি এলোভেরার সাথে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ নিমপাতা ও মধুর মিশ্রণ ঘটিয়ে খুব সহজে চমৎকার প্যাক তৈরি করে আমরা লাগাতে পারি। এতে খুব সহজে আমাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং আমাদের ত্বক অনেক বেশি সুন্দর হয়ে যাবে।  
  • এছাড়াও আমরা এলোভেরা সাথে মিষ্টি কুমড়ার পেস্ট, চালের গুঁড়ো, মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারি।
  • আমরা খুব সহজে আমাদের ত্বক থেকে ব্রণের দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করতে পারি শুধুমাত্র এলোভেরা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।
  • এলোভেরা এবং কাঁচা হলুদের সাথে সামান্য পরিমাণ লেবু ও মধু যোগ করে যদি আমরা মুখে লাগায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সম্পূর্ণ চেহারা থেকে ব্রণের সমস্যা চলে যাবে এবং চেহারায়  অনেকটা গ্লো চলে আসবে।
  • এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের ত্বক রয়েছে, যেমন ধরুন শুষ্ক ত্বক, তৈলাক্ত ত্বক।এর কোনটাই আমাদের জন্য ভালো নয়। আমাদের উচিত ত্বকের মধ্যে ব্যালেন্স রাখতে।

শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে এলোভেরাঃ

  • শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে এলোভেরা কিন্তু অনেক ভালো কাজ করে। তাই এই ধরনের ত্বকের পরিচর্যার জন্য আমরা এলোভেরার তৈরি নানা ধরনের প্যাক ব্যবহার করতে পারি।
  • এলোভেরা, মিষ্টি কুমড়ার পেস্ট, চালের গুঁড়ো ও কফি পাউডার এর উপকরণ গুলো একসাথে মিক্স করে যদি আমরা মুখে লাগায় তাহলে আমাদের মুখ থেকে শুষ্কভাব চলে যাবে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এলোভেরাঃ

  • বন্ধুরা, আমাদের অনেকের ত্বক রয়েছে খুব বেশি তৈলাক্ত যার কারণে ব্রণ এর উৎপাদন খুব বেশি বেড়ে যায়। আর রাতে ঘুমানোর পর সকালে উঠলে কপালে বা নাকে এত বেশি তেল বের হয় যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
  • এই ধরনের তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এলোভেরা কিন্তু দারুণ কাজ করে। এলোভেরাতে মুলতানি মাটি এবং সামান্য পরিমাণে টকদই ও লেবুর রস যদি আমরা যোগ করে মুখে লাগাতে পারেন এবং এটি নিয়মিত করেন, তাহলে খুব সহজে মুখ থেকে তৈলাক্তভাব নিয়ে যেতে পারবেন।

বয়সের কারণে কুঁচকে যাওয়া বা গর্ভজনিত কারণে ত্বক ফেটে যাওয়া রোধ করতে এলোভেরাঃ

  • বয়সের কারণে কুঁচকে যাওয়া বা গর্ভজনিত কারণে ত্বক ফেটে যাওয়া বা বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যার কারণে ত্বক ফেটে যাওয়া রোধ করতে এলোভেরা কিন্তু দারুণ কাজ করে।
  • এ ধরনের সমস্যা গুলো মোকাবেলা করতে যে সকল উপকরণ লাগবে………

২ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল।

২ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।

১ চা চামচ চিনি।   

যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ

  • উপকরণ গুলো একসাথে ভালোমতো মিক্স করে যদি আপনাদের ত্বকে লাগান, এবং ২০-২৫মিনিট অপেক্ষা করার পর ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলেন, খুব দারুণ একটি ফলাফল কিন্তু আপনারা পাবেন।
  • এবং নিয়মিত ব্যবহারের মধ্য দিয়ে থেকেই এ ধরনের সমস্যা গুলো চিরতরে বিদায় করতে পারবেন।

নোটঃ সেন্সেটিভ বা অয়েলি ত্বকের ক্ষেত্রে এলোভেরা সরাসরি মুখে ব্যবহার না করায় ভালো।কোন একটা উপকরণ মিক্স করে ব্যবহার করা উত্তম। 

তাহলে বন্ধুরা আপনাদের কাছে একটাই পরামর্শ আপনাদের সমস্যা অনুযায়ী উপরের দেওয়া যে কোন একটি প্যাক আপনারা ব্যবহার করুন এবং সেটা অবশ্যই নিয়মিত করবেন এবং আপনারা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী ফলাফল পাবেন ।