সকল নারীদের স্বপ্ন থাকে নিজের শরীরের রঙ একটু সুন্দর ও একটু লাবণ্যময় করে তুলতে। আর দুধে আলতা রং বললে আমাদের স্বপ্নের রং কেই বোঝায়। তাই এই ধরনের রঙ কিন্তু সবারই প্রত্যাশা থাকে।
বন্ধুরা, আপনাদের সবার প্রত্যাশাকে পূরণ করতে অর্থাৎ ত্বকের রংকে দুধে আলতা রঙের করতে আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি হলুদ ও দুধের ফেসিয়াল। হলুদ ও দুধের এই ফেসিয়ালটি মাত্র ১ বার ব্যবহারে আমাদের ত্বক দুধে আলতা রঙের হবে।
আপনারা যদি ভালো মতো মনোযোগ দিয়ে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে হলুদ ও দুধের এই ফেসিয়ালটি ত্বকে মাত্র ১ বার ব্যবহারে করেন , তাহলে আপনাদের স্বপ্ন পূরণ হবে অর্থাৎ আপনারা আপনাদের প্রত্যাশিত দুধে-আলতা গায়ের রং পেয়ে যাবেন।
বন্ধুরা, তাহলে আর স্বপ্ন না দেখে হলুদ ও দুধের ফেসিয়াল ব্যবহার করে বাস্তবে কিভাবে তা পরিণত করা যায় সে সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক।
ত্বকের রং দুধে আলতা করতে কাঁচা দুধ ও হলুদের ফেসিয়াল
- হলুদ ও দুধ ত্বকের রঙ ফর্সা করতে অন্য রকম কাজ করে।
- যে ফেসিয়ালটি কথা আজ আপনাদের বলতে যাচ্ছি তা সম্পূর্ণ করতে চারটি ধাপ আমাদের অনুসরণ করতে হবে।
চলুন বন্ধুরা দেখে নেওয়া যাক,
১ম ধাপ
মুখ পরিষ্কার করাঃ
- হলুদ ও দুধ দিয়ে ফেসিয়াল করার জন্য ১ম ধাপ টি হল মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করা। এ জন্য কি কি উপকরণ লাগবে এবং কিভাবে এই ধাপটি সম্পন্ন করা যায়।
যে সকল উপকরণ লাগবে…
- পরিমান মত দুধ।
- ২ টেবিল চামচ চিনি।
- কয়েকটি তুলো।
যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
- দুধের সাথে সামান্য পরিমাণ চিনি মিক্স করে একটি পাতলা তরল মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তার মধ্যে তুলোর বড় বড় টুকরো ডুবিয়ে রাখতে হবে।
- এই তুলো ওখান থেকে তুলে আমাদের মুখ ভালো মতো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
- ৩ মিনিট ধরে এই তুলো দিয়ে আমাদের মুখটা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
২য় ধাপ
স্ক্রাবিংঃ
- স্ক্রাবিংএর মধ্য দিয়ে আমাদের ত্বকের ভিতরে জমে থাকা ময়লা বের করে ফেলি। সাথে সাথেই লোমকূপে যে তৈলাক্ত পদার্থ থাকে বা লোমকূপে যে তৈলাক্ত জীবাণু জমে থাকে তা দূর করে।
- সাথে সাথে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস এর মত সমস্যা দূর করে দেয়।
এই স্ক্রাবটি করতে যে সকল উপকরণ লাগবে………
- আধা কাপ দুধ।
- ২ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ।
- ১টি লেবু।
যেভাবে এটি ব্যবহার করবেনঃ
- দুধের সাথে হলুদ বাটা একসাথে মিক্স করে লেবুতে এই মিশ্রণটি অল্প অল্প পরিমাণে নিয়ে পুরো ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে।
- সময় নিয়ে ম্যাসাজ করতে হবে অন্তত ১০ মিনিটের জন্য।
- যদি আপনি সেটা পুরো শরীরে করেন তাহলে ও করতে পারেন।
- ১০ মিনিট পর আমাদেরকে ঠান্ডা জল দিয়ে এই হলুদ এবং দুধের মিশ্রণটি ধুয়ে ফেলতে হবে।
৩য় ধাপ
স্টেমিংঃ
৩য় ধাপ অতিক্রম করতে যে সকল উপকরণ লাগবে………
- একটুখানি গরম পানি।
- একটা তোয়ালে।
- সামান্য পরিমাণ গোলাপ জল।
- অল্প দুধ।
- ২ টেবিল চামচ চালের গুড়া।
যেভাবে স্টেমিং করা হয়ঃ
- এই বিশেষ কাজ টি করতে একটি পাতিলে গরম পানি সিদ্ধ করতে দিবেন। তাতে অবশ্যই আপনারা সামান্য পরিমাণে গোলাপ জল ফেলে দিবেন। এবং সাথে দুধ দিবেন ।
- বন্ধুরা, খুব চমৎকার একটি তরলের মিশ্রণ তৈরি হয়ে যাবে। যখন সম্পূর্ণভাবে পানি ফুটে যাবে অর্থাৎ ১০ মিনিট সময় যখন হয়ে যাবে তখন আপনি পাতিল টি নামিয়ে রাখেন।
- সামান্য ঠান্ডা হলে এই পাতিল এর উপরে আপনার মুখ রেখে তার উপরে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দেবেন।
- যাতে গরম পানির ভাপ অন্য কোথাও না যায়।
- মুখ খুব কাছে নিবেন না। এমনভাবে আপনার মুখ বা ত্বক এ গরম পানির ভাপে রাখতে হবে যাতে আমাদের ত্বক পুড়ে না যায়।
- অন্ততপক্ষে ১২ মিটার দূরত্বে আমাদেরকে থাকতে হবে।
- এরপরে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে এই ভাপ টি আমাদের নিতে হবে
- এটি নেওয়ার কারণ হলো আমাদের ত্বকের লোমকূপ গুলো অনেক পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি প্রশস্ত হয় এবং আমাদের ব্লাড সার্কুলেশন বা রক্ত চলাচল সচল হয়।
- এর পাশাপাশি আমাদের ত্বকের নিচের টিস্যুগুলো অনেক প্রাণবন্ত হয় এবং সক্রিয় হয়।
৪র্থ ধাপ
ফেইসপ্যাকঃ
৪র্থ ধাপ সম্পন্ন করতে যে উপকরণ লাগবে………
- ২ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।
- ২ চা চামচ পাকা টমেটোর পেস্ট।
- ২ টেবিল চামচ আলুর রস।
- ১ চা চামচ মধু।
- ১ চা চামচ লেবুর রস।
- ২ চা চামচ টক দই।
- ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি।
নোটঃ সেনসেটিভ ত্বকের ফেসিয়াল করার ক্ষেত্রে লেবুর রস বাদ দিতে পারেন।
যেভাবে ব্যবহার করবেনঃ
- সব উপকরণ একসাথে করে একটি চমৎকার প্যাক তৈরি করে ফেলতে পারেন।
- এই প্যাকটি তৈরি হয়ে গেলে আমাদের পুরো ত্বকে এই প্যাকটি লাগিয়ে ২০ মিনিট সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
- বন্ধুরা ২০ মিনিট পরে আমরা গোসল করে ফেলতে পারি। গোসলের সময় এই প্যাকটি একসাথে পরিষ্কার হয়ে যাবে।
- এটি আমরা শুধু আমাদের মুখে ও করতে পারি অথবা পুরো শরীরেও করতে পারি।
- এতে আমাদের ত্বক এত সুন্দর দুধে আলতা রঙের হবে যে আপনারা নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারবেন না।
এই ফেসিয়ালটি আপনি মাসে দুইবার করতে পারেন। বন্ধুরা নিয়মিত ফেসিয়ালটি করে আপনারা আপনাদের ত্বককে যত ইচ্ছা তত সুন্দর করে তুলতে পারেন।