মানুষ মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারী। বর্তমান সময়ে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য আমরা ত্বকের যত্ন এবং রূপচর্চার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী । নজর কাড়া উজ্জ্বল এবং ফর্সা ত্বক আমাদের সকলেরই প্রত্যাশিত ।
তাই আমরা আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করে আসছি। যার ফলে আমরা স্বল্প সময়ের জন্য নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করলেও আমাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এসব কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেকে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে বিটরুট।
এই বিটরুটে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যার সাহায্যে বিভিন্ন ফেসপ্যাক তৈরির মাধ্যমে ত্বক হয়ে উঠবে স্থায়ীভাবে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল এবং ফর্সা। তাহলে বন্ধুরা চলুন দেখে নেয়া যাক অতিমাত্রায় ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে বিটরুটের অত্যন্ত কার্যকরী কিছু ফেইসপ্যাক।
ত্বককে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে বিটরুটের অত্যন্ত কার্যকরী কিছু ফেইসপ্যাক সমূহঃ
কাঁচা তরল দুধ এবং বিটরুটের ফেইসপ্যাকঃ
বিটরুট এবং কাঁচা দুধের বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করলে আমাদের ত্বক হয়ে উঠবে গভীর থেকে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল এবং ফর্সা। তাই ত্বককে অতিমাত্রায় উজ্জল ও ফর্সা করতে কাঁচা তরল দুধ এবং বিটরুটের এই ফেইসপ্যাকটি ব্যবহার করুণ।
ফেসপ্যাক তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
- ২ চামচ বিটরুটের রস
- এক চামচ কাঁচা দুধ
- ১ চামচ ময়দা
ফেসপ্যাক তৈরি করার ও ব্যবহার করার পদ্ধতিঃ
ধাপঃ
একটি ছোট পরিষ্কার পাত্রে সবগুলো উপাদান একসাথে নিয়ে ভালোভাবে গুলিয়ে মিশিয়ে তৈরি করে নিন বিটরুটের অত্যন্ত কার্যকরী ফেসপ্যাকটি ।
এরপর তুলা বা হাতের সাহায্যে আলতোভাবে স্ক্রাব করে মিশ্রণটি সম্পূর্ণ মুখে এবং গলায় লাগিয়ে দিন।
ভালোভাবে শুকানোর জন্য 15 থেকে 20 মিনিট সময় দিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এটি ব্যবহার করুন।
কাঁচা হলুদ এবং বিটরুটের ফেসপ্যাকঃ
বিটরুট বিদ্যমান প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের সব দাগ দূর করে এবং মৃত কোষ গুলোকে সজীব করে তুলতে সাহায্য করে। সেই সাথে হলুদে বিদ্যমান উপাদান আমাদের ত্বককে স্থায়ী ভাবে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে সাহায্য করে।
তাই ত্বককে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে এই প্যাকটিও ব্যবহার করতে পারেন ।
ফেসপ্যাক তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
- ১ চামচ বিটরুটের রস
- ১ চামচ কাঁচা হলুদের পেষ্ট
- আধা চা-চামচ গোলাপজল
ফেসপ্যাক তৈরি করার ও ব্যবহার করার পদ্ধতিঃ
ধাপঃ
সবগুলো উপাদান একসাথে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে তৈরি করে নিন বিটরুটের এই অত্যন্ত কার্যকরী ফেসপ্যাকটি।
পরিষ্কার মুখে তোলা বা মুখের ব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি ভালভাবে মুখে ও গলায় স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন।
এটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুণ ।
এরপর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
এলোভেরা, মধু এবং বিটরুটের ফেসপ্যাকঃ
অ্যালোভেরা ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া সমূহ দূর করে ত্বকের মৃত কোষ গুলোকে সতেজ এবং পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল এবং ফর্সা।
মধুতে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান আমাদের ত্বককে টানটান করে রাখে যার ফলে ত্বকের যৌবন অটুট থাকে ফলে বলিরেখা ও বিভিন্ন দাগ দূর হয়। এই ফেসপ্যাকটি অধিকাংশ সময়েই স্কিন কেয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে।
ফেসপ্যাক তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদানঃ
- ৩ চামচ বিটরুটের রস
- ২ চামচ চালের গুড়া
- ১ চামচ অ্যালোভেরার রস
- ১ চা-চামচ মধু
ফেসপ্যাক তৈরি করার ও ব্যবহার করার পদ্ধতিঃ
ধাপঃ
একটি পাত্রে সব উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে তৈরি করে নিন বিটরুটের ফেসপ্যাকটি।
পরিষ্কার মুখে তোলা বা মুখের ব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি ভালভাবে মুখে লাগিয়ে নিন।
শুকানোর জন্য ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় দিন ।
এবার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের তেলতেলে ভাব একবারেই দূর করবে এবং ত্বককে করে তুলবে উজ্জল ও ফর্সা।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
বিটরুট অথবা বিটরুটের ফেসপ্যাকে বিদ্যমান কোন উপাদান যদি আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হয় তাহলে বিটরুট এর ফেসপ্যাক তৈরির সময় ঐ উপাদান ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
ফেসপ্যাক লাগিয়ে সূর্যের তাপে, গরম স্থানে অথবা ধুলাবালি যুক্ত স্থানে যাবেন না।
অতিমাত্রায় ত্বক ফর্সাকারী বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে বিটরুট অন্যতম। বিটরুট এর ফেসপ্যাক গুলো ব্যবহার করে খুব দ্রুত সময়ে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে দাগহীন, ফর্সা ও উজ্জল। তাই অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা ত্বক পেতে আমাদের নির্দেশিত পন্থাসমূহ অনুসরণ করে বিটরুট এর ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।