মৃত ব্যক্তির কোন কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায়

বন্ধুরা আজকে যে বিষয়টি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি সেটি হল মৃত ব্যক্তির কোন কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায়, অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির কোন কোন অঙ্গ গুলো দিয়ে একজন সুস্থ মানুষ কে বাঁচানো যাবে.

মৃত্যুর পর মৃত ব্যক্তির কোনও অঙ্গ যদি কোন রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করলে সে ব্যক্তি ফিরে পেতে পারে সুস্থ জীবন। হাজার হাজার মানুষ কিডনি, লিভার, হার্ট, ইত্যাদি রোগে মৃত্যু পথযাত্রী হয়, তখন অঙ্গ প্রতিস্থাপন বাঁচার একমাত্র পথ হয়ে দাঁড়ায়।

বিভিন্ন দেশে আমাদের দেশ সহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করে কিডনি, লিভার, হার্ট,  ফুসফুস,  ক্ষুদ্রান্ত,  চোখের কর্নিয়া, ইত্যাদি প্রতিস্থাপন করে মৃত ব্যক্তির পরিমাণ কমিয়ে ফেলেছে। একজন মৃত ব্যক্তির বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করে ৭ জন ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব হবে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

যদিও আমাদের দেশে এর সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু অন্যান্য দেশে এর হার অনেক বেশি।

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার ২৬%,  
  • স্পেনে ৩৫%
  • ক্রোয়েশিয়াতে ৩০%।
  • পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশিরভাগ প্রতিস্থাপনের জন্য নির্ভর করতে হয় মৃত ব্যক্তির অঙ্গ দানের উপর।
  • মৃত ব্যক্তির লিভার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ছয় হাজার মানুষের লিভার প্রতিস্থাপন করে।  তাকে সেখানে আমাদের দেশে জনসংখ্যা বেশি হওয়া সত্বেও বছরে লিভার প্রতিস্থাপন মাত্র ১২ শত অর্থাৎ অন্য দেশে যতটা করা সম্ভব তার মাত্র ১০০ ভাগের এক ভাগ করে থাকে আমাদের এই দেশ। পাশাপাশি এটাও সত্য ব্যক্তির নিকট আত্মীয় পরিজন ওরা অঙ্গ দানেও রাজি থাকেনা। আবার কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপনের উপযুক্ত থাকেনা।

এখন আমরা জানবো কোন কোন অঙ্গ গুলো কখন বা কোন সময়ে দান করা উচিত।   

  • ১৮ বছর বয়সের মধ্যে যে কোন একজন ব্যক্তি কিডনি ও লিভার দান করতে পারে। ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত কিডনি ও লিভার দান করা যায়।  
  • ফুসফুস ১৮ বছরের কম বয়সি কারো কাছ থেকে নিতে হলে তার পিতামাতার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। এই নিয়ে একেক দেশে একেক নিয়ম থাকলেও ৫০ বছর পর্যন্ত মানুষ প্রদান করা যায়।  এছাড়াও হার্ট ৫০ বছর পর্যন্ত দান করা যায়।
  • যেকোনো বয়সেই চক্ষুদান করা যায়। তবে মারা যাবার পর কেউ দান করতে চাইলে তাকে আগে থেকে ডোনার কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কারণ যোগদানকারী মারা যাবার ছয় থেকে আট ঘণ্টার মধ্যে কর্মী সংগ্রহ করতে হয়। অন্যত্র চিকিৎসকেরা বলেন সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত কারো কাছ থেকে নিয়ে তা অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করলে ভালো কাজ করে।
  • এছাড়া মরণোত্তর অঙ্গদান কোন ব্যক্তির শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গটিকে মৃতদেহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে ।
  • এছাড়াও সরাসরি দেহদান ও করা যায়। দেহ দান করে দিলে সেটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার কাজে লাগে। এজন্য দেহের কোন অংশে ফেরত দেওয়া হয় না।  

বন্ধুরা এখন আপনারা জানতে পারলেন একজন মৃত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে কতজন সুস্থ মানুষ সুস্থ হতে পারে। একজন মৃত ব্যক্তি চাইলে ৭ জন অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করে তুলতে পারে।

বন্ধুরা যে ব্যক্তি মারা যাবে এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর শুধু মাটির নিচে চলে যাবে এবং বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ দ্বারা মূল্যবান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। তার চেয়ে হাজারগুন ভালো হয় যদি আপনি মরার পরেও হাজার জন মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকেন আপনার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলো নিয়ে। যদিও সুস্থ মানুষ সুস্থ হতে পারে এবং হাজার জন স্টুডেন্ট যদি আপনার শরীর নিয়ে গবেষণা করে নতুন কিছু শিখতে পারে। এবং তা পরবর্তী কাজে আসে সেটা অনেক ভালো। যেটা উন্নত বিশ্বের মানুষেরা অনুসরণ করে থাকে।

উন্নত বিশ্বের লোকেরা মনে করে থাকে এটা তাদের জন্য দায়িত্বের মতো। তাদের মৃত্যুর পরে তাদের অঙ্গগুলোর উপর অন্যজনের অধিকার আছে। তারা এই বিষয়টি মনে করে।

বন্ধুরা আমাদের দেশে যেহেতু জনসংখ্যা বেশি সাথে সাথে রোগের পরিমাণ ও বেশি তাই আমাদের মধ্যে এই বিষয়টির উপর অনেক বেশি জোর দেওয়া দরকার। সাথে সাথে জনসচেতনতা তৈরি করা দরকার যাতে করে এত বড় সুযোগ হাতে থেকেও আমরা যাতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ না করি। ধন্যবাদ।