আমাদের মস্তিষ্কের গঠন ও কাজগুলো জেনে নিন

মস্তিষ্কের গঠন ও কাজ, আজকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানবো।

মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের পরিচালক।

মস্তিষ্ক কে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়।

  • অগ্রমস্তিষ্ক
  • মধ্য মস্তিষ্ক
  • পশ্চাৎ মস্তিষ্ক

প্রথমে আসা যাক, এসকল মস্তিষ্ক কাকে বলে???

তারপরে আমরা বলব প্রতিটা আলাদা আলাদা অংশের মস্তিষ্কের কাজ।  প্রথমে আসা যাক,  

অগ্রমস্তিষ্ক

মস্তিষ্কের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশকে বলা হয় অগ্রমস্তিষ্ক। অগ্রমস্তিষ্ক কে গুরু মস্তিষ্ক ও বলা হয়।

ডান বা বাম অংশটি সম্পূর্ণভাবে বিভক্ত। কারণ এটি দুটি অংশের মাঝখানে কাজ করে। এই বিভেদ কাজকে সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলা হয়।

মস্তিষ্কের ডান ও বাম অংশ দুটি একগুচ্ছ নিউরন দিয়ে সংযুক্ত থাকে।  একে করপাস ক্যালোসাম বলে।  

বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার দেহের অংশ এবং ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের অংশটি।এটি একটি ঢেউ তোলা অংশের মত।

এবং এই ঢেউ তোলা অংশটি একটি পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে একে মেনিনজেস বলে। সেরিব্রাম এর সবচেয়ে বাইরের স্তর টির নাম কর্টেক্স।  কর্টেক্স অসংখ্য কোষ দিয়ে গঠিত।

কর্টেক্স অসংখ্য নিউরনের দেহ কোষ দিয়ে গঠিত। এবং এর রং ধূসর রংয়ের হয়।

অগ্র মস্তিষ্কের কাজ সম্পর্কে আমরা এখন জানবো

  • সেরিব্রাম হলো প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে স্নায়ু ধারণা গ্রহণের একটি অঙ্গ । এবং এটি প্রত্যেক স্নায়ু ধারণা প্রেরণের উচ্চতর কেন্দ্র।
  • দেহ সঞ্চালন শহর। প্রত্যেক কাজ ও অনুভূতির কেন্দ্র।
  • সেরিব্রাম বলতে সাধারণত আমরা অগ্রমস্তিষ্ক কে বুঝি, সেটা আমরা আগেই বলেছি। সেরিব্রাম আমাদের চিন্তা-চেতনা, স্মৃতি,  ইচ্ছা, বাকশক্তি ও ঐচ্ছিক পেশির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।  
  • কোন উদ্দীপকের প্রতীক কী ধরনের সাড়া দিতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে সেরিব্রাম।
  • সকল প্রাণীর মধ্যে মানুষের অগ্র মস্তিষ্কের বিবর্তন সর্বাধিক অগ্রগামী ও বিকশিত। তাই এটি সহজে প্রভৃতির নিয়ন্ত্রক ও বাকশক্তি নিয়ন্ত্রণকারী অংশ।

মধ্য মস্তিষ্ক

এখন আসা যাক মধ্য মস্তিষ্কের কাজে। পশ্চাৎ মস্তিষ্কের উপরের অংশ হলো মধ্য মস্তিষ্ক। এটি অগ্রমস্তিষ্ক ও পশ্চাৎ মস্তিষ্ক কে সংযুক্ত করে।  মধ্য মস্তিষ্কের কাজ

  • বিভিন্ন পেশার কাজের সমন্বয় সাধন ও ভারসাম্য রক্ষা করে।  
  • দর্শন ও শ্রবণ এর ক্ষেত্রেও এই মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।  
  • এটি অগ্র পশ্চাৎ মস্তিষ্কের মধ্যে যোগসূত্র রচনা করে থাকে

পশ্চাৎ মস্তিষ্ক

মধ্য মস্তিষ্কের পেছনের অংশে পশ্চাৎ মস্তিষ্ক অবস্থান করে।  সেরিবেলাম ও মেডুলা অবলংগাটা নিয়ে গঠিত হয়েছে পশ্চাৎ মস্তিষ্ক।

পশ্চাৎ মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশটিকে সেরিবেলাম বলে। পিছনে অবস্থিত অংশকে বলে এটি মেডুলা অবলংগাটা। মস্তিষ্কের মাঝখানে অবস্থিত এর সমন্বয়ে গঠিত মেডুলা অবলংগাটা মস্তিষ্কের সবচেয়ে পিছনের অংশ।

পশ্চাৎ মস্তিষ্কের কাজ গুলো কি কি

  • সেরিবেলাম দেহের পেশী টান নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় সাধন করে দেহের ভারসাম্য রক্ষা এবং লাফালাফির কাজে জড়িত পেশীগুলোর কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
  • স্বাভাবিক শ্বাসক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মেডুলা অবলংগাটা থেকে উৎপন্ন আর জোড়া করোটিক স্নায়ু খাদ্য গলাধঃকরণ ফুসফুস ইত্যাদির কিছু কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

বন্ধুরা  মস্তিষ্ক যে কাজগুলো সম্পন্ন করে থাকে তার মধ্যে কিছু কাজ মস্তিষ্ক দিনের বেলায় করে। আর কিছু কাজ মস্তিষ্ক রাতের বেলায় করে। কিন্তু মস্তিষ্ক শরীরের এমন একটি অঙ্গ যে কিনা  দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেশি কাজ করে  থাকে। অর্থাৎ মানুষ যখন ঘুম থাকে, তখন শরীরের একমাত্র অঙ্গ মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে।

পুরো মস্তিষ্ক একটি বিশেষ কাজ করে থাকে সেটি হলো মস্তিষ্ক সবসময় অনুসন্ধান ইচ্ছুক। আবিষ্কার করতে চাই নতুন নতুন জিনিস। উদ্ভাবন করতে চায়। শিশুদের দিকে তাকালেই প্রমাণ পাওয়া যায়, শিশুরা শুধু পরিবেশের দিকে তাকিয়ে দেখে শেখে না। বরং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝতে চাই এসব কাজকর্ম মস্তিষ্কের। এই সকল কাজকর্ম কিভাবে হচ্ছে কিভাবে তারা তথ্য সংরক্ষণ করে রাখছে। কিভাবে সিদ্ধান্ত তাড়া দিচ্ছে,  এজন্য ছোটবেলায় আগুনে হাত দেওয়ার সক্রিয় বাচ্ছারা বড় হয়ে কেউ আর আগুনে হাত দেয় না।

এখানে খুব সংক্ষেপে আমরা মস্তিষ্কের কর্মপদ্ধতি গুলো লিখলাম। কিন্তু বন্ধুরা মস্তিষ্ক যে কত বৃহৎ পরিসরে কাজ করে সেটা বিজ্ঞানের এখনো  অজানা এবং অজানায় থাকবে।

মনে হয় আল্লাহর সৃষ্টির সবটুকু মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়।