নারীর পূর্ণতা মা হওয়ায় । মায়েরা জেনে নিন একজন নবজাতক শিশুর কিভাবে যত্ন নেবেন

নারীর পূর্ণতা মা হওয়ায় । তাই প্রতিটি নারী বা মায়েরা জেনে জানা দরকার একজন নবজাতক শিশুর কিভাবে যত্ন নিতে হয়।

আজ এই বিষয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করব কিভাবে আপনারা নবজাতক শিশুদের যত্ন নিবেন। বন্ধুরা তার আগে আমাদের জানতে হবে নবজাতক শিশু বলতে কাদের বোঝায়।

নবজাতক শিশুঃ

একটি শিশুর ১৮ দিন পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়কে আমরা নবজাতক শিশু বলে থাকি। এ সময় দুজনের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

নবজাতককে নিরাপদ রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই।  

কারণ এই সময় বাচ্চার শরীরে যে কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সহজে আক্রান্ত হতে পারে। জন্মের পর এক ঘন্টা শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ জন্মের পরে প্রথমে ঘন্টা শিশুর বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে একটু কষ্ট হয়।

তাই প্রথম এই একঘন্টা কে গোল্ডেন one-hour বলা হয়।

নবজাতক শিশুর যত্নঃ

শাল দুধ পানঃ

এখন প্রথমে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পরে যে কাজটি করতে হবে, সেটি হল মায়ের দুধ পান করাতে হবে।

আমরা একে শালদুধ বলে থাকি। শালদুধকে শিশুদের জন্য প্রথম টিকা বলা হয়। এবং শিশুকে এই শাল দুধ বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করে।

বিজ্ঞানীরা শালদুধের বিপরীতে আজ পর্যন্ত কোন কিছু আবিষ্কার করতে পারেনি। অর্থাৎ শালদুধে যে পরিমাণ গুনাগুন রয়েছে।

একজন শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে শালদুধ কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাই বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর শিশুকে প্রথমে শালদুধ দিতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাঃ

এরপরে বাচ্চাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মানে বাচ্চাকে গোসল করানো নয়। বাচ্চাকে কমপক্ষে তিন দিন পরে গোসল করাতে হবে।

জন্মের পর নবজাতককে নরম কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

পরিধানঃ

বাচ্ছা যদি গরমের সময় জন্ম নেই অর্থাৎ সামার সিজন এ জন্মগ্রহণ করে তখন বাচ্চাকে কখনো মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে নেওয়া উচিত নয়।

কিন্তু বাচ্চা যদি শীতের সময় জন্মগ্রহণ করে তাহলে বাচ্চাকে মোটা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে নিতে হবে। বাচ্চা যদি গরমের সময় জন্মগ্রহণ করে প্রয়োজনীয় কাজ করা যেতে পারে

ডাক্তারের পরামর্শঃ

নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন আমরা সাধারণত জানি ২-২.৫ কেজি।  কোনো কারণে যদি বাচ্চার ওজন এই মানসম্মত এর চেয়ে কম হয়,  আমাদেরকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শিশুর জন্মের পরে নবজাতককে মধু বা চিনি পানি খাওয়ানো ঠিক নয়। যেটা কুসংস্কার হয়ে অনেকদিন থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে আমাদের সমাজে।

শিশু জন্মের পর মাকে বেশি করে পানি খেতে হবে।  এছাড়া পরিবারের স্বাভাবিক খাবার মাকে খেতে দিতে হবে।  

জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সি নবজাতককে যে ঘরে রাখা হয় অনেকে সেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখে, এটা কখনই ঠিক নয়।

নবজাতক মায়ের ঘরের দরজা-জানালা সব সময় খোলা রাখা উচিত। যাতে আলো-বাতাস আসতে পারে এবং বিভিন্ন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ যাতে না ঘটতে পারে।

দুধ খাওয়ানোঃ

বুকের দুধ বৃদ্ধি করে যেসব খাবার

নবজাতক শিশু যখনই দুধ খেতে চায় তখনই নবজাতক শিশুকে দুধ দিতে হবে অর্থাৎ দুধ খাওয়ানোর জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা উচিত নয়।

জীবাণুমুক্ত রাখাঃ

এছাড়াও বাহির থেকে কেউ এসে হঠাৎ করে নবজাতককে কোলে তুলে নেওয়া উচিত নয়। কারণ বাইরে থেকে এলে শরীরে অনেক জীবাণু ময়লা থাকতে পারে তাই হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে বাচ্চাকে কোলে তুলে নিতে হবে।

বাচ্চা যদি প্রস্রাব পায়খানা করে সাথে সাথে কাপড় পাল্টে দিতে হবে একটি কথা বলে রাখা ভাল সেটি হল ছেলেমেয়েরা নবজাতক থাকা অবস্থায় সব সময় পাম্পাস ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে করে আলো-বাতাস সহজেই ঢুকতে পারে না যা পরবর্তীতে বড় কোন সমস্যা হতে পারে।

তাই জরুরি কোনো কাজ না থাকলে বা জরুরি কোনো কাজে বের হতে না হলে যদি বাড়িতে থাকা লাগে তাহলে অবশ্যই পাম্পাস এড়িয়ে চলাই ভালো।

বাচ্চাদের নখ খুব দ্রুত বাড়ে। যখন বাচ্চারা নবজাতক থাকে তখন বিভিন্ন কিছুতেই তাদের নখ লেগে যায়।

তাই সব সময় নখ পরিষ্কার এবং নখ ছোট রাখতে হবে।  যাতে করে বাচ্চারা মুখে আঙ্গুল দিলেও জীবাণু বা মুখ যাতে ফেটে না যায়।

বাচ্ছার গায়ে যাতে জীবাণু না থাকে এছাড়াও বাচ্চাদেরকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করতে হবে।

সাথে সাথে মাকেও পরিষ্কার থাকতে হবে। আর যে রুমে বাচ্চাকে রাখা হবে সেই রুম সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।

বন্ধুরা আমাদের যে সকল বন্ধুরা প্রসূতি অবস্থায় রয়েছে অর্থাৎ যাদের ছোট বাচ্চা রয়েছে তারা আমাদের উপরের দেওয়া পরামর্শ গুলো অনুসরণ করলে আপনার নবজাতক বাচ্চাকে আপনি সুস্থ রাখতে পারবেন।

ধন্যবাদ