শতবর্ষের ইতিহাসের সাক্ষী টাঙ্গাইলের মহেরা জমিদার বাড়ি

টাঙ্গাইলে অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি
——-
পরিবার কিংবা বন্ধু বান্ধব মিলে একদিনের জন্যে ঘুরে আসা যায় ঢাকার কাছেই টাঙ্গাইলে অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি থেকে। প্রাচীন বাড়ি গুলোকে রঙ এবং মেরামত করে এখন এতই সুন্দর লাগে, এটাই হয়তো দেশের সবচেয়ে সুন্দর জমিদার বাড়িগুলোর মধ্যে মহেরা জমিদার বাড়ি একটি । বর্তমানে মহেরা জমিদার বাড়ি পুলিশের প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। জমিদার বাড়ি
♣️ টিকেট কেটে জমিদার বাড়ি ঢুকেই দেখা মিলবে “বিশাখা সাগর” নামের একটি দীঘি। বিশাল বড় এই দীঘি আমাদের প্রথমেই মুগ্ধ করে দিলো। দীঘিতে বোট রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে, আধা ঘণ্টা ১০০ টাকা। এছাড়াও ট্রাভেল কার দিয়ে পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখা যাবে। এর জন্য খরচ হবে আধা ঘন্টা ৩০০ টাকা । দীঘি দেখে একটু এগোলেই দেখা মিলবে দুটো বিশাল সুরম্য গেট। এই গেট দিয়ে জমিদার বাড়ির মূল প্রাঙ্গনে আমরা প্রবেশ করি। জমিদার বাড়ি

➖ চৌধুরী লজঃ জমিদার বাড়ি প্রবেশের পরেই মূল ফটক দিয়ে দেখা যায় চৌধুরী লজ। চৌধুরী লজ একটি দ্বিতল ভবন। এতে রয়েছে মোট ছয়টি কক্ষ। চৌধুরী ভবনের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন সুধীন্দ্র কুমার রায় চৌধুরী।
➖ আনন্দ লজঃ সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাড়িটি হলো আনন্দ লজ। অত্যন্ত সুন্দর কারুকাজ করা এই বাড়িটি এক দেখায় মুগ্ধ করে দেয়। সাদা ও গোল্ডেন রঙের মিশ্রনে কারুকাজ করা আটটি কলাম রয়েছে, সাথে রয়েছে দারুন সুন্দর কাজ করা বারান্দা।
➖ মহারাজ লজঃ বাইজেনটাইন স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত মহারাজ লজ ভবনের সামনে ছয়টি (৬) টি কলাম রয়েছে। মহারাজ লজের সামনে রয়েছে সিঁড়ির বাঁকানো রেলিং ও ঝুলন্ত বারান্দা যা ভবনের শোভা বৃদ্ধি করেছে। ভবনটিতে মোট কক্ষ আছে বারো (১২) টি।
➖ কালীচরণ লজঃ জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির শেষের দিকে নির্মিত এই কালীচরণ লজ অন্য ভবন থেকে অনেকটা আলাদা। ইংরেজি ‘ইউ’ (U) অক্ষরের আদলে এই ভবনটি ইংরেজ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত।
➖ জমিদার বাড়ির কালীচরণ লজে এখন মিউজিয়াম করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত আগের অস্ত্র রাখা আছে। এছাড়া ভেতরের ইন্টেরিয়র ডিজাইন গুলোও চোখে লাগার মত সুন্দর। আমরা এগুলো দেখে বের হয়ে আনন্দ লজ, চৌধুরী লজ, মহারাজ লজ ঘুরে দেখি।জমিদার বাড়ি
♣️ জমিদার বাড়ির পিছনের দিকে সুন্দর করে সাজানো। একদিকে মিনি চিড়িয়াখানা রয়েছে, যেখানে হরিণ, ময়ূর এসব দেখা যাবে। আরেক পাশে রয়েছে শিশু পার্ক, যেখানে মিনি ট্রেন, নাগরদোলা সহ বিভিন্ন ছোট রাইড এবং বাচ্চাদের খেলার সুব্যবস্থা রয়েছে। এরপর কিছুদূর এগোলে দেখা যাবে পাসরা পুকুর। এইখানের মাঝে বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এই পুকুরের পেছন দিকে সুন্দর আরেকটা বসার ব্যবস্থা রয়েছে।। পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসে এখানে একটু বিশ্রাম নেয়া যাবে আবার ছবি তোলা যাবে।
♣️ যাতায়াতঃ
— মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে নিরালা সুপার বাসে যাওয়া যায় (টিকেট ১৬০টাকা জন প্রতি) । এছাড়া বিনিময় আছে, লোকাল, টিকেট ১০০ টাকা। এছাড়া এয়ারপোর্টেও এই বাসের কাউন্টার রয়েছে।
— টাঙ্গাইল নাটিয়াপাড়া বাস স্ট্যান্ডের আগে দুবাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কাছে নেমে যেতে হবে।
— এখান থেকেই সি এন জি তে করে সোজা জমিদার বাড়ি, ভাড়া ২০ টাকা জন প্রতি।
— জমিদার বাড়িতে ৮০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ভেতরে যেতে হবে।
♣️ খাবার–
খাওয়া দাওয়ার জন্যে এখানে ঢোকার গেটের পাশে হ্যালো ক্যাফে নামের একটি রেস্টুরেন্ট আছে।। দাম হিসেবে খাবার মোটামুটি। এছাড়াও নাটিয়াপাড়া বাজার গিয়ে লোকাল হোটেলেও খাওয়া দাওয়া সেরে ফেলা যাবে।