ত্বকের উজ্জ্বলতা হারানো আজকাল সব মেয়েদের একটি প্রধান সমস্যা।নিয়মিত যত্নের অভাবে ত্বক হয়ে যায় প্রাণহীন এবং হারিয়ে ফেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা। এই ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে আমরা কত না চেষ্টা করি। অনেক কিছু ব্যবহারের পরেও ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে পাওয়া যায় না। তাই বিবর্ণ ও প্রাণহীন ত্বক ফিরে পেতে রোজ ওয়াটার বা গোলাপ জল খুবই উপকারী।
ত্বকের পিএইচ এর ভারসাম্য বজায় রাখতে গোলাপজল খুবই কার্যকারী।এটি স্কিনের তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।গোলাপ জল বা রোজ ওয়াটার টোনার বা ক্লিনজার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
গোলাপজলের ব্যবহার মোগল আমলেও।তখন সুগন্ধি হিসেবে, আবারো খাবারেও বাড়তি স্বাদ পেতে ব্যবহার করা হতো।সে ধারা ও এখনো চলছে। সবার সৌন্দর্য অন্যতম উপাদান গোলাপ জল।
ত্বকের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে অনেকে নিয়মিত প্রাকৃতিক এই উপাদান ব্যবহার করে।ইরানে প্রথম বড় বড় গোলাপের পাপড়ি পানিতে বাষ্পীভূত করে বিশুদ্ধ করে নেওয়া হয়।
এরপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাষ্পকে পানিতে রূপান্তর করে বোতল জাত করা হয়।মধ্য প্রাচ্যসহ আমাদের দেশে গোলাপজলের অনেক ব্যবহার।যুগে যুগে যেন গোলাপ জলের কদর বেড়ে চলছে।
১। ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে গোলাপজলের ফেসপ্যাকঃ
ত্বকের যত্নে সবচেয়ে ভালো টোনার হলো গেলাপজল। গোলাপজল ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে এনে ত্বকে দিবে গোলাপি আভা।
যা যা লাগবেঃ
- ২ টেবিল চামচ বেসন
- ২ চামচ লেবুর রস
- প্রয়োজন মত গোলাপজল
তৈরি ও ব্যবহার পদ্ধতিঃ
সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
শুকানো হয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এই প্যাকটি ব্যবহার করার ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে যাবে।গোলাপজল ত্বকে সতেজ ও কোমল রাখে। গরমের তীব্রতা অনেকের ত্বকের কোমল ও সতেজ রাখতে বাধা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে বের হওয়ার আগে গোলাপজল লাগিয়ে বাইরে বের হবেন।
গোলাপজল ত্বককে প্রাকৃতিক আদ্রর্তা ও পুষ্টি দান করার সাথে সাথে চেহারাও সতেজ রাখে। দিনে একবার হলেও গোলাপজল লাগানোর চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার ত্বক সতেজ থাকবে।
২। ব্রণের দাগ দূর করতে গোলাপজলের ফেসপ্যাকঃ
ব্রণের সমস্যা মেয়েদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। একটা ব্রণ হলে তখন তাদের চিন্তার শেষ নাই।তাই এই সমস্যা দূর করতে অনেক পন্থা অবলম্বন করে থাকে।গোলাপজল ব্রণের সমস্যা দূর করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। ব্রণের দাগ দূর করতে এই প্যাক ব্যবহার করুণ ।
- ২ চামচ নিমপাতার পেষ্ট
- একটি বাটিতে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস,
- আর ১ টেবিল চামচ গোলাপজল
তৈরি ও ব্যবহার পদ্ধতিঃ
সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে তা সম্পূর্ণ মুখে মেখে অপেক্ষা করুন । ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
গোলাপ জলে থাকে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান যা ব্রণের ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ রক্ষা করে।এছাড়াও গোলাপ জলে অ্যান্টি ইনফ্লামেনটারি উপাদান রয়েছে যা ত্বক পরিষ্কার রাখে ব্রণ হবার প্রবণতা হ্রাস করে।
লোমকূপ পরিষ্কার করে দিয়ে মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করবে এবং ব্রণের সমস্যা দূর করবে।
৩.বয়সের ছাপ দূর করতে গোলাপজলঃ
যেকোনে ত্বকের জন্য গোলাপজল উপকারী।যে কোন ত্বকে এটি ব্যবহার করা যায়। প্রতিদিন রাতে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন । পরে একটি বাটিতে গোলাপজল আর গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকে লাগান।
এতে করে ত্বক নমনীয় হয়। এটি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে ত্বক নমনীয় হবে এবং ত্বক হতে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যাবে ।
৪.বয়সের ছাপ দূর করতে গোলাপজলঃ
দুশ্চিন্তায় কারণে ত্বকের মধ্যে বয়সের ছোপ পড়তে দেখা যায়।এই ছোপ দূর করতে গোলাপ জলের জুড়ি মেলা ভার।গোলাপজল নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চেহারায় বয়সের ছাপ দরে পাবে সহজে।
কারণ এতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ -এর গুণ যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বলিরেখা,চোখের নিচে ফুলে যাওয়া ও বয়সের ছাপের সমস্যাটি এড়াতে বেশ কার্যকারী।গোলাপজলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের কোষগুলোর ভেতর থেকে দৃঢ়তা প্রদান করে। ফলে ত্বক থাকে টানটান।ফেসপ্যাক,স্ক্রাব ও টোনার হিসেবে গোলাপজলকে ব্যবহার করা যায়।